বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
সবসময় আপডেটেড তথ্যের জন্য জার্মান এ্যাম্বাসির এবং ডয়েচে ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখবেন। এখানে শুধুমাত্র অভিজ্ঞতা বর্ণনা করা হল। সকল এপ্লিকেশন ফর্ম, ঠিকানা ইত্যাদি এর জন্য অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখুন। ধন্যবাদ।
আমি শুধু আমার অভিজ্ঞতার হিসেবে প্রক্রিয়াটি বর্ণনা করছি। মনে রাখবেন যেকোনো সময়ে এটি পরিবর্তন করা হতে পারে। কাজেই সবসময় জার্মান এ্যাম্বাসির ওয়েবসাইটে চোখ রাখবেন আপডেটেড তথ্য জানার জন্য। বিশেষ করে এ্যাম্বাসির ছুটির দিন, এ্যাটেসটেশনের সময় বা নিয়ম পাল্টেছে কিনা এটা জেনে রাখবেন।
* এ্যাটেসটেশনের অফিসিয়াল নিয়মকানুন-
১। প্রথমেই জেনে নিন আপনার যেদিন যাওয়ার ইচ্ছা সেদিন এ্যাম্বাসি খোলা কি না। ছুটি না হলে এই কাজের জন্য জার্মান এ্যাম্বাসিতে যাওয়ার সময় হচ্ছে প্রতি রবিবার থেকে বুধবার দুপুর একটা থেকে দুইটার মাঝে।
* এ্যাম্বাসির হোমপেজের লিঙ্ক – বিশেষ ছুটি হলে এই পেজের কোথাও না কোথাও সেটা ওরা উল্লেখ করবে।
* এ্যাম্বাসির সাধারণ ছুটির তালিকা-
২। দিন ঠিক করা শেষ? দারুণ 🙂 ।এবারে ডয়েচে ব্যাংক এর ফর্ম ওদের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে পূরণ করুন। নিচে একটি স্যাম্পলের লিঙ্ক দিলাম। ওভাবে করতে পারেন। ডিজিটালি মানে কম্পিউটারে ফিল আপ করা ভালো। এতে পড়তে সুবিধা হয়। পূরণ করার সময় ফর্মের ঘর শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও যদি আপনার আরো লেখার থাকে তো হাতে লিখে দিতে পারেন। আমি সেটাও ডিজিটালি লিখেছিলাম Foxit PDF Reader দিয়ে। এটা আপনার ইচ্ছা। পুরোটা হাতে লিখলেও কোনো সমস্যা নেই। আপনি যদি কোনো ভার্সিটিতে চান্স না পেয়ে থাকেন কিন্তু (সময় বাঁচানোর জন্য বা অন্য কারণে) আগে থেকেই এ্যাকাউন্ট খুলতে চান তাতে কোনো সমস্যা নেই। ভার্সিটি এর নামের অংশটুকু ফাঁকা রাখবেন সেক্ষেত্রে।
বিস্তারিত বোঝার জন্য নিচে একটা পূরণ করা স্যাম্পল ফর্মের ডাউনলোড লিঙ্ক দিলাম।
সাবধান, সাবধানঃ সব পূরণ করবেন শুধু সিগনেচার ছাড়া। দুটি সিগনেচার ভুলেও করবেন না। ওটা আপনাকে এ্যাম্বাসিতে অফিসারের সামনে করতে হবে। যদি ভুলে আগে করে নিয়ে যান তো ঐ ফর্ম ওরা নেবে না। আপনাকে আরেকটি নিয়ে আসতে হবে।
* ডয়েচে ব্যাংক এর ফর্ম ডাউনলোডের লিঙ্ক-
* পূরণ করা স্যাম্পল ফর্মের লিঙ্ক-
৩। সাথে এক কপি পাসপোর্টের (ছবি + বিস্তারিত তথ্যের দুটি পেজের) ফটোকপি নেবেন। আমি কালার কপি মানে স্ক্যান করে কালার প্রিন্টাউট নিয়েছিলাম (দেখতে ভালো লাগে 🙂 ) সাদাকালো কপি হলেও সমস্যা নেই। শুধু আপনার ছবিটা যেন একেবারেই অস্পষ্ট না মনে হয় সেদিকে একটু খেয়াল রাখবেন।
৪। এবারে একটা A4 সাইজের কাগজ ভরার বড় খামে প্রেরকের ঠিকানায় ইংরেজিতে আপনার নাম-ঠিকানা আর প্রাপকের ঠিকানায় নিচেরটুকু লিখে (আমি প্রিন্টাউট নিয়ে আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিয়েছিলাম) জিনিসপাতি ভরে ফেলুন। কি কি নিচ্ছেন তার তালিকা-
- ১। সিগনেচার বাদে বাকিটুকু পূরণ করা ডয়েচে ব্যাঙ্কের এ্যাপ্লিকেশন ফর্ম।
২। পাসপোর্টের ফটোকপি।
৩। আপনি কোনো ভার্সিটির এ্যাডমিশন লেটার পেয়ে থাকলে সেটার ফটোকপি বা প্রিন্টাউট।
৪। আপনার পাসপোর্ট।
৫। কলম।
* প্রাপকের ঠিকানা-
ঠিকানার জন্য অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখুন!
৫। যদিও ওয়েবসাইটে লেখা আছে দেড়টা তবে হাতে সময় রাখার জন্য একটার মাঝে যাওয়াই ভালো। আপনার সিরিয়াল তাহলে আগে হবে এবং মাঝখানে অন্য কাজে আসা লোকজন থেকেও আগে থাকতে পারবেন। এ্যাম্বাসির গেটে গিয়ে বলবেন ব্লক এ্যাকাউন্টের ফর্ম এর জন্য এ্যাটেসটেশন করাতে এসেছেন। ভেতর থেকে আপনাকে দেড়টার সময় আসতে বলবে। আপনি মোটামুটি সোয়া একটার দিকেই আবার যাবেন। লোক বেশি হলে দেখবেন তখনই একজন একজন করে ভেতরে ঢোকাচ্ছে। আপনার পালা এলে ধীরেসুস্থে ঢুকে যাবেন। এরপরে ওখানকার অফিসিয়ালরাই আপনাকে কি কি করতে হবে জানাবে। সামনে কাগজে সিরিয়াল দেওয়ার জন্য নাম- মোবাইল নাম্বার লিখে রেখে আপনাকে ভেতরে ওয়েটিং রুম এ বসাবে।
আপনার সিরিয়াল এলে আপনার নাম ডাকা হবে। শুধুমাত্র এ্যাপ্লিকেশন ফর্ম, পাসপোর্টের ফটোকপি, পাসপোর্টের অরিজিনাল কপি আর কলম নিয়ে ভেতরে যাবেন। আপনারে অফিসার তার সামনে সিগনেচার করতে বলবে। সিগনেচার করবেন। খেয়াল রাখবেন আপনার পাসপোর্টের সিগনেচার আর ফর্মের সিগনেচার যেনো হুবহু একই হয়। এবার ওরা আপনার সবকিছু (কলম বাদে 🙂 ) রেখে আবার বাইরে ওয়েটিং রুমে ওয়েট করতে বলবে। একে একে সবার নেওয়া শেষ হলে ওরা এ্যাটেসটেশন করে আপনাকে নাম ডেকে সবকিছু ফেরত দেবে। সাধারণত এক থেকে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। কাজ হয়ে গেলে অরিজিনাল পাসপোর্ট বাদে বাকি সবকিছু খামে ভরে কুরিয়ার করে দেবেন।
৭। এবার অপেক্ষা করতে থাকুন। নির্দিষ্ট সময় পরে ওরা আপনাকে ইমেইল করে কনফার্মেশন জানাবে। আমার ক্ষেত্রে কুরিয়ার করার নয় দিন পরে কনফার্মেশন ইমেইল এসেছে। ইমেইল এ একটা পিডিএফ এ্যাটাচ করা থাকবে।ওই পিডিএফ টা প্রিন্টআউট করে বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংক কে প্রমাণ হিসেবে দেখাতে পারবেন।
আপনার এ্যাকাউন্ট তৈরি করাতে সফল হওয়ার জন্য আগে থেকেই অভিনন্দন! 🙂 ভালো থাকবেন।
পূরণ করা স্যাম্পল ফর্ম:
********একই রকম /এই রিলেটেড আর্টিকেল পড়তে পারেন********
ব্লকড একাউন্ট
এছাড়া পড়তে পারেনঃ
- অঙ্গীকারনামা বা Letter of Undertaking (ব্লকড একাউন্টের টাকা পাঠাতে)
- “ব্লক অ্যাকাউন্ট খোলা এবং ইউরো ট্রান্সফার’’ – ট্রাস্ট ব্যাংক বাংলাদেশ
- অপারেশন ঢাকা ব্যাংক
- জনতা ব্যাংক: কম খরচে বিদেশে টাকা পাঠানো
- ব্লক একাউন্টের কথা – DBBL Bank
- My way to legally transfer Euro – Mutual Trust Bank Ltd.
- ব্লকড একাউন্ট নিয়ে ভাবনা! আর না! আর না!! updates 23rd Jan 2015 – NCC Bank
- বাংলাদেশ থেকে কিভাবে জার্মানিতে ব্লকড ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন
- কীভাবে জার্মানির ডয়েচে ব্যাংকে ব্লক এ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন? (০৮- জুন- ২০১৫)
- ব্লকড একাউন্টের জন্য ডয়েচে ব্যাংকের ফর্ম যেভাবে পূরণ করবেন (Deutsche Bank)
- ভিসা পাননি ? জেনে নিন ব্লকড একাউন্ট এর টাকা কীভাবে ফেরত আনবেন
- ব্লকড একাউন্টের জন্য জার্মান এমব্যাসি থেকে এটেস্টেশন – Attestation of a Signature
- জার্মানীতে লেখাপড়া: ছাত্র ছাত্রীদের প্রতি বিনীত আবেদন – ব্লকড একাউন্ট (ডি স্প্রাখে)
- স্টুডেন্ট ভিসা রেগুলেশন আপডেট – এপ্রিল, ২০১৫ – (IELTS/German Language?)