অবশেষে আল্লাহর অশেষ রহমতে গতকাল আমি #Family_reunion_visa হাতে পেলাম।আমি আমার জার্নিটা একটু শেয়ার করতে চাই যাতে ভবিষ্যতে যারা এ্যাপ্লাই করবেন তারা যেন আমি যেই সমস্যা ফেস করেছি তা থেকে সমাধান পেতে পারেন।এছাড়া আমি গ্রুপের সব বড় ভাই বোন থেকে অনেক হেল্প পেয়েছি বিশেষ করে Munia Humaira Mumuআপু,Taraj Kabir ভাই, mujjammil E haamem ভাইয়ের কথা না বললেই নয়।যেকোনো সমস্যায় আমি উনাদের নক দিয়ে হেল্প পেতাম।ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে।

এইবার আসা যাক, কিভাবে কি করেছি সেই বর্ননায়।

আমার হাসবেন্ড স্টুডেন্ট ভিসায় জার্মানীর FAU Erlangen– Nürnberg এ পড়াশোনা করছে।কিন্তু ও থাকে তার পাশের শহর forccheim এ।কাগজ পত্র কি কি লাগবে সেটা এ্যাম্বাসী ওয়েবসাইটেই আছে।তাও একটু বলি, ২টা application form যেখানে signed declaration form এ সাইন থাকবে applicant এর।এটা অনেকেই স্কিপ করে যায়, এবং আমিও করেছিলাম।শেষে ভাইবার দিন যাওয়ার পথে তারাহুরো করে দোকান থেকে বের করতে হয়েছে।তবে না বের করলেও চিন্তার কারন নেই, এটা এ্যাম্বাসীতেই করা থাকে।না আনলে আপনাকে ওরাই দিবে, সেখানে নাম,এ্যাড্রেস,সাইন, ফোন নাম্বার এসব লিখতে হয়।এটা application form এর সাথেই জমা দিতে হয়।এর পর জার্মান নিয়ম অনুসারে ৩ কপি বায়মেট্রিক পাসপোর্ট ফটোগ্রাপ,valid পাসপোর্ট, পাসপোর্ট ডাটা পেইজ এর ফটোকপি, বার্থ সার্টিফিকেট ,নিকাহ নামা বাংলা ও ইংরেজি, ম্যারেজ সার্টিফিকেট ইংরেজিতে,A1 সার্টিফিকেট , স্পাউসের পুরো পাসপোর্ট এর ফটোকপি, রেসিডেন্ট পারমিট, বাসার কন্ট্রাক্ট পেপার, জব কন্ট্রাক্ট পেপার,৩ মাসের স্যালারী স্টেটমেন্ট এবং ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট ও ম্যাপ লাগবে।

নিকাহনামা এ ৩/৪ টা পয়েন্ট খুব জুরুরি৷বিয়ে কোথায় হয়েছে, বিয়ে কবে হয়েছে, রেজিষ্ট্রেশন ডেট।বর ও কনের নাম,ঠিকানা, বাবা মা এর নাম পাসপোর্ট অনুসারে হওয়া। এসব জায়গায় ভুল হলে, তখন ই নিকাহ্নামা রি-রেজিস্ট্রেশান করতে হয়।যেটা আমার করতে হয়েছে।বাংলাদেশ ল’ অনুসারে আমি যে জায়গায় বসে কবুল বলব ঠিক ওই ওয়ার্ডের কাজী দিয়েই বিয়ে ও রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।সেটা পাসপোর্ট এর পারমানেন্ট এ্যাড্রেসের ওয়ার্ডে হলে খুব ভালো, না হলেও সমস্যা নেই।আর এই তথ্যটা আমরা জানতাম না।আমার বিয়ে হয়েছে আমার পাসপোর্ট এর পারমানেন্ট এ্যাড্রেসেই।তবে আমার কাবিন খুব হুট করে হওয়ায় আমার বাসা থেকে এক আত্নীয় কাজী কে ফোন দেয়া হয়।যদিও উনি ছিলো ১১ নং ওয়ার্ডের৷ আর আমার বাসা ছিলো ১ নং ওয়ার্ডে।যদিও এই ২ ওয়ার্ডের দুরত্ত মাত্র ২/৩ কিলোমিটার। আমার কাজী ভিন্ন ওয়ার্ডের হয়েও কিছু এক্সট্রা টাকা ইনকাম এর জন্য আমার ওয়ার্ডে এসে বিয়ে পরিয়ে যান।যেটা উনি একদম ঠিক করেননি।যেটার জন্য আমাকে আবার রি-রেজিট্রেশান করতে হয় অনেক ঝামেলা করে। আমার বিয়ে হয় বাসায়, কিন্তু কাজী নিজের ভুলের জন্য নিকায় নামায় বিয়ের স্থান দেয় তার কাজী অফিসের ঠিকানা।যার কারনে V.O যখন প্রশ্ন করে আমার বিয়ে কোথায় হয়েছে, তখনই পেচটা লেগে গেলো।আমি চাইলে মিথ্যা বলতে পারতাম।কিন্তু আমি বলি নি।যদি ভ্যারিফিকেশানে গিয়ে ওরা জানতে পারতো যে বিয়ে আসলে বাসায় হয়ে, কাজী অফিসে না, সেই ক্ষেত্রে আমার ভিসা রিজেক্ট হয়ে যেত।V.O বলেছেন, এটা আপনি এখানে বলাতে আপনি মিসিং ডকুমেন্ট(নিকাহ নামা,ম্যারেজ সার্টিফিকেট) হিসেবেই জমা দিতে পারবেন।উনি আমাকে এটাও বললেন এটা বাংলাদেশের কাজীদের কমন সমস্যা। আপনাকে বিবাহের স্থান অবশ্যই যেখানে কবুল বলেছেন সেটাই দিতে হবে। সেটা কমিউনিটি সেন্টার হলে, সেটার নাম, আর বাসা হলে বাসার ঠিকানা, বা ওয়ার্ড নাম্বার।

যেহেতু আমি রি-রেজিশট্রেশান করেছি, সেটার প্রসিডিউরটা বলি।সেটা হলো আমার স্পাউস একটা পাওয়ার অফ এটর্নি জার্মানি থেকে নোটারী করে।পাওয়ার অফ এটর্নি আপনার স্পাউস যাকে খুশি তাকে দিতে পারবেন। আমি এই প্রশ্ন V.O কে করলে উনি বলেছিলেন, আমার হাসবেন্ডের ভাই, চাচা, বাবা এমন কেও।যাকে দিবেন তার বয়স অবশ্যই ১৮ এর উপর হতে হবে।যাকে P.O.A দিবেন উনিই কাবিন নামায় বরের জায়গায় উনার নাম লিখবেন রি-রেজিস্ট্রেশান এর ক্ষেত্রে।

স্পাউস স্টুডেন্ট ভিসায় থাকলে কমন যেই বিষয়টা নিয়ে আমারা চিন্তায় থাকি তা হলো ব্যাংক এর টাকা কিভাবে দেখাবো।আমার ক্ষেত্রে ১৩০০০ ইউরো আমার হাসবেন্ড ব্যাংক একাউন্টে রেখেছিলো আর হাসবেন্ড এর ইনকাম এরাউন্ড ১০০০ ইউরো দেখিয়েছিলো।ব্লক করিনি।

#আমার ভিসা ইন্টারভিউ ছিলো 8.12.2019
#মিসিং ডকমেন্ট (নিকাহ নামা বাংলা,ইংরেজী,ম্যারেজ সাটিফিকেট) জমা দেই 20.12.2019
#বিডি ভ্যারিফিকেশান হয় জানুয়ারির লাস্টে
#জার্মানির ভ্যারিফিকেশানে আমার হাসবেন্ডকে কল করে নি।
#সরাসরি ভিসা ডিসিশান এর মেইল পাই 23.02.2020
#তার ২/৩ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট আর ট্রাভেল ইন্সুরেন্স জমা দেই।আমাকে বলা হয় একদিন পর গিয়ে পাসপোর্ট কালেক্ট করতে৷ আমার মেইলেও তাই লিখা ছিলো।কিন্তু একদিন পরে গেলে তারা আমাকে বলে আরো এক সপ্তাহ পরে যেতে।তারপর ফাইনালি গতকাল তারা আমাকে ভিসা দেয় মেইল দেয়ার ১৫ দিন পর।

আর একটা বিষয় বলে দেই, আমাকে ভাইবার দিন আমার V.O কোনো পাসপোর্ট কালেকশন স্লিপ দেয় নি। আমাকে শুধু টাকার পেমেন্ট এর রিসিট এবং মিসিং ডকুমেন্ট এর কাগজ দিয়েছিলো।কিন্তু আমি যতবারই পাসপোর্ট কালেক্ট করতে গিয়েছি ততবারই এটার জন্য প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি।আমাকে আমার V.O আমার ফর্মের উপর ”i have recieved my passport ” লিখে সাইন নিয়েছিলো।এটা আমি উনাদের বলে বুঝাতে পারছিলাম না।তারপরো সব কিছু ঝামেলার পর ভিসা হাতে পেয়েছি।তাতেই আলহামদুলিল্লাহ।

এই ছিলো আমার মোটামুটি আড়াই মাসের জার্নি।যদিও আড়াইমাস শুনতে কম লাগছে।তবুও ঝামেলা গুলা ছিলো খুবই বিরক্তিকর।বিশেষ করে নিকাহনামা নিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে আমাকে কাজীর ভুলের জন্য।

#Family_reunion_visa
#Spouse_visa

5 thoughts on “পারিবারিক পুনর্মিলন ভিসা – Family Reunion Visa (Spouse Visa)”
  1. Amar 41 no ward e thaki. Amar bia je kazi poraise uni 11 no ward er.. Aita nia ki kono problem hbe?Amar ki abar re registration korte hbe nikhanama?

Leave a Reply