গল্প, উপন্যাস কিংবা কবিতা পড়তে ভালবাসেন না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া বিরল। নির্মল বিনোদন হিসেবে এর জুড়ি মেলা ভার। শুধু কী তাই? কিছু কিছু বই আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে যায় রঙিন কল্পনার জগতে, যেখানে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করতে পারেন, উত্তর করতে পারেন কিংবা করতে পারেন নিজেই নিজের সাথে বিতর্ক। প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর পুরনো আমাদের এই পৃথিবী। প্রাণের যে ধারা থেকে আমরা এসেছি সে হোমো সেপিয়েন্স এর বয়সও হবে প্রায় ২.৫ লক্ষ বছর। অথচ লিখন পদ্ধতির আবিভার্ব হয়েছে ব্রোঞ্জ যুগের কিছু আগে, মাত্র খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০ বছর(প্রায়) পূর্বে। সুমেরীয়রা আবিস্কার করেছিল তা। মনে করুন তো কেমন হত যদি আমরা জানতে পারতাম সেই আদিমকালের মানুষদের নিজের লেখা বাস্তব অভিজ্ঞতা! ধরুন যে ভদ্রলোক বা মহিলা আগুন আবিষ্কার করেছিল তিনি যদি লিখে যেতে পারতেন তাঁর অভিজ্ঞতা। কী রোমাঞ্চকর একটি অনুভূতি! যদিও গ্রীক পুরাণ মিথলজি অনুসারে প্রমিথিউস মানুষকে আগুন এনে দিয়েছিল।

সে হিসেবে বই নিয়ে গড়া পাঠাগার এর ক্ষমতা অসীম। একারণেই হয়ত যুগে যুগে ক্ষমতাবানেরা এর উপর খড়গহস্ত হয়েছেন। সম্ভবত এজন্যই আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগার ৪৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জুলিয়াস সিজারের মিশর আক্রমণের সময়,  ২৭০ খ্রিস্টাব্দে আরেলিয়ান আক্রমণের সময়,  ৩৯১ খ্রিস্টাব্দে কপটিক পোপ থেওফিলাসের নির্দেশে এবং ৬৪২ খ্রিস্টাব্দে মিশরে মুসলমান আক্রমণের সময় সংঘটিত পৃথক পৃথক অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়।

বিস্ময়কর ব্যাপারে হল একবিংশ শতাব্দীতে এসেও আমরা এরকম একটি অশুভ ধারা বাংলাদেশে আতংকিত হয়ে লক্ষ্য করছি। এই তো সেদিন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুদ্ধস্বরে ঢুকে হামলা করা হলে প্রকাশক ও ব্লগার আহমেদুর রশীদ টুটুলসহ তিনজন আহত হন এবং পৃথক আরেকটি হামলায় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির মালিক ফয়সাল আরেফিন দীপন নিহত হন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং আক্রমণকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি করি।

প্রাসঙ্গিকভাবে জিওর্দানো ব্রুনো (১৫৪৮-১৬০০)র কথা এসে যায়, তাঁকে আপনারা অনেকেই জানেন। তিনি ১৫৮৪ সালে ভয়ঙ্কর এক বই লিখেছিলেন De l’Infinito Universo et Mondi নামে,  যার বাংলা করলে দাঁড়াবে – ‘অনন্ত মহাবিশ্ব এবং বহু বিশ্ব নিয়ে’। এই বইয়ে তিনি অস্বীকার করলেন বাইবেলে লেখা পৃথিবীকেন্দ্রিক মহাবিশ্বকে, ঘোষণা করলেনঃ ‘পৃথিবী তো সৌরজগতের কেন্দ্র নয়ই, এমনকি এই মহাবিশ্বের সংখ্যাও একটি নয়, বরং এর সংখ্যা হতে পারে অনন্ত অসীম।‘ এই বক্তব্য এবং বইয়ের কারণে চার্চ তাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করে। কিন্তু তাতে কি কিছু সমাধান হয়েছিল?  ইতালির ক্যাম্পো ডি ফিওরির ঠিক যে জায়গাটায় জিওর্দানো ব্রুনোকে ১৬০০ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়,  প্রায় তিনশত বছর পর ঠিক সে জায়গায় জুন ৯, ১৮৮৯ সালে উন্মোচিত হয় ব্রুনোর একটি দীর্ঘ ব্রোঞ্জমূর্তি। মাঝেমাঝে তাই হেসে ভাবি, “ইতিহাসের শিক্ষাই হল এটি যে ইতিহাস থেকে কেউ শেখে না”।

সবশেষে, শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর ভাষায়, বই পড়ুন শুধু মন জোগাতে নয়,  মনকে জাগাতেও। সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।


ম্যাগাজিন ডাউনলোড/দেখতে ক্লিক করুন (প্রায় 6.49 মেগাবাইট)


আশা করি, আমাদের এই পরিবেশনা আপনারা বরাবরের মত ভালবাসবেন। গত ১.৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিরবিচ্ছিন্ন প্রকাশনা আপনাদের ভালবাসার জন্যই সম্ভব হয়েছে। আপনারাই আমাদের ম্যাগাজিনের প্রাণ! তাই যেকোন মতামত আমাদের জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।


ম্যাগাজিন ডাউনলোড/দেখতে ক্লিক করুন (প্রায় 6.49 মেগাবাইট)


ধন্যবাদান্তে,

টিম জার্মান প্রবাসে

১১ নভেম্বর ২০১৫

২৭ কার্তিক ১৪২২

Team German Probashe

অনিচ্ছাকৃত বানানভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আবেদন রইল।


চাইলে আপনিও লেখা/ছবি পাঠাতে পারেন!


লেখা আহ্বান, বিষয়:  মুক্তির স্বপন

বাঙ্গালির গৌরবের মাস ডিসেম্বর। নয় মাসের রক্তগঙ্গায় সাঁতরে ১৬ই ডিসেম্বরে পূর্বাকাশে ভেসে উঠেছিল হাজার বছরের আকাংখিত স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। সেই স্বাধীনতার চেতনা তরুণেরাই টিকিয়ে রেখেছে দশকের পর দশক। তাদের চিন্তা তাদের কর্ম সবকিছুই প্রভাবিত হয় পূর্বপুরুষদের রক্তদানের স্মৃতি রোমন্থন করে। রক্ত দিয়ে কেনা এই বাংলাদেশ কেমন আছে? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আজ কতটুকু বাস্তবায়িত? আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প- সাহিত্য, রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কি হাল দাঁড়িয়েছে গত পঁয়তাল্লিশ বছরে? এসব নিয়ে আমাদের ভাবনাটাই বা কি?

বিজয় দিবসকে সামনে রেখে আমাদের জার্মান প্রবাসেম্যাগাজিনে আমরা দেশ গিয়ে, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনার আশা, আপনার স্বপ্ন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিয়ে আপনার মতামত, দেশের ভবিষ্যত কোন দিকে ধাবমান, সমস্যার সমাধান কোথায় নিহিত এই সকল বিষয়ে আপনাদের ধারণা, ভাবনা ও মতামত প্রকাশ করতে চাই।


আপনাদের অনুরোধে পরিবর্ধিত ডেডলাইনঃ ২ ডিসেম্বর ২০১৫

লেখা পাঠানঃ [email protected]
অথবা পেজের ইনবক্সে পাঠানঃ www.facebook.com/pages/জার্মান-প্রবাসে/212610425614429
ছবির পাঠানোর জন্য বিস্তারিতঃ http://goo.gl/90IVlk
লেখার সাথে নাম ঠিকানা পেশা আর একটি ছবি অবশ্যই পাঠাবেন।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ শুধু জার্মানি বা বাংলাদেশ থেকেই নয়, যেকোন দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাদর আমন্ত্রণ আমাদের ম্যাগাজিনে! তাই আমাদের ম্যাগাজিনে লিখতে হলে আপনাকে বাংলাদেশ বা জার্মানিতেই থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই!


জার্মান প্রবাসে আড্ডা দিতে চাইলেঃ www.facebook.com/groups/BSAAG/(বিশ্বস্ততার সাথে ৫১,০০০+ সদস্য নিয়ে)

——————————————————————–

অনলাইনে পড়তে চাইলেঃ

mm

By Debjani Ghosh

চিফ এডিটরঃ জার্মান প্রবাসে ম্যাগাজিন। বর্তমানে EWS, Ulm University তে পিএইচডি রিসার্চার হিসেবে কর্মরত। রিসার্চ টপিক "ইলেক্ট্রিক ফ্লাইট"। মাস্টার্স করেছি ইলেক্টিক্যাল পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, RWTH Aachen University তে।

Leave a Reply