ইউরোপে সামার। আকাশে থাকবে ঝকঝকা রৌদ্র। গাছপালা ভরা থাকবে সবুজ পাতায়। আর থাকবে মৃদুমন্দ ঝিরঝিরে বাতাস। আহা কি শান্তি। ভাবতেই কেমন যেন মনটা আনচান করে উঠে। এই হল সামার নিয়ে আমাদের এক্সপেক্টেশান।
কিন্তু প্রতিবছরই সামারের মাঝখানে ২-৩ সপ্তাহ এর একটু ব্যাতিক্রম ঘটে। আকাশে রোদ থাকে ঠিকই। কিন্তু সেটা থাকে ভোর ৪ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত। আর তাও যেই সেই রোদ না। ঠাডাভাঙ্গা কড়া রোদ। আর মৃদুমন্দ বাতাস তো দূরের কথা, ফকিরা বাতাসও থাকে না। :/ :/ :/
তাপমাত্রা থাকে ৩০-৩৫ ডিগ্রী। আর মরার উপরে খড়ার ঘা হল, জার্মানীতে কোন বাসায় এসি বা ফ্যানের কোন ব্যাবস্থা নাই।
যতই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকেন, জার্মানীতে ফ্যান কিনব না, কিন্তু এই দুই সপ্তাহের কড়া আবহাওয়া আপনাকে ফ্যান কিনতে বাধ্য করবে। দুঃখজনক ব্যাপার হল, গায়ে বাতাস লাগানোর জন্য ফ্যানের ব্যাবহার শুধুই দুই সপ্তাহ। বছরের বাকি সময়গুলোতে, এই ফ্যান শুধু ভাত-তরকারী ঠান্ডা করার কাজেই ব্যাবহৃত হয় !!!
ফ্যান কোথা থেকে কিনব, দাম কেমন এটা নিয়ে অনেকের আইডিয়া নাই (বিশেষ করে যারা নতুন এসেছেন)। এই লেখায় ফ্যানের দাম এবং কোথায় পাওয়া যায়, এই সম্পর্কিত কিছু আইডিয়া দেয়ার চেস্টা করব।
১। টেবিলফ্যান/টিসভ্যান্টিলেটর। আমরা যারা ছাত্র এবং ডর্মে অথবা ভেগে তে থাকি, তাদের জন্য এই ফ্যান সবচেয়ে পারফেক্ট। দাম পড়বে ১০ইউরো থেকে ৪০-৫০ ইউরোর মধ্যে। সাইজ ও ফাংশন ভেদে দামের পরিবর্তন হয়। এদের মাঝে স্ট্যান্ড সহ/স্ট্যান্ড ছাড়া, পাখা সহ/পাখা ছাড়া বিভিন্ন রকমই আছে। আর স্পিড কন্ট্রোলেরও সুযোগ রয়েছে। তবে ১৫-২০ ইউরো বাজেট রাখলে, বেশ ভাল ফ্যান পেয়ে যাবেন।
২। ইউএসবি ফ্যান। এগুলো সাইজে তুলনামূলকভাবে ছোট। ল্যাপটপ/মোবাইল চার্জারের ইউএসবি পোর্ট দিয়ে চালানো সম্ভব। পোর্টেবল হিসেবে ইউজ করতে চাইলে, এটা পুরাই পারফেক্ট চয়েজ। এটার বাতাস কম, কিন্তু ওজনে হাল্কা ও দামে সস্তা। ৩-১৫ ইউরোর মাঝে ভাল ইউএসবি ফ্যান পেয়ে যাবেন। লাস্ট সামারে একটা ইউএসবি ফ্যান কিনেছিলাম। ওটা লাইব্রেরীতে পড়ার সময় বেশ কাজে দিত। কিন্তু হেভি ইউজের জন্য ইউএসবি ফ্যান খুব একটা ভাল না।
৩। এয়ার কুলার। দুই সপ্তাহের জন্য এত আরাম করে কি লাভ !!!! বেশি গরম লাগলে গোসল করে আসেন। দেখবেন সব ফুরফুরা… 😛 😛 😛
নিচে কিছু ওয়েবসাইটের লিঙ্ক দিচ্ছি। লিঙ্কের সার্চ অপশনে গিয়ে ventilator/Tischventilator/USB ventilator লিখে সার্চ করলেই চলে আসবে আপনার কাঙ্খিত প্রোডাক্ট। ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিন আপনার নিকটস্থ শোরুম। অথবা অনলাইনে অর্ডার করুন।
আর জার্মানীতে বেশিরভাগ ইলেক্ট্রিক প্রোডাক্টই পছন্দ না হলে ১৪ দিনের মধ্যে ফেরত দেয়া যায়। তবে সেক্ষেত্রে কোন ফিজিকাল ড্যামেজ যেন না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর কেনার সময় কাস্টমার সার্ভিসে কথা বলে ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে নেবেন। আর বেশিরভাগ প্রোডাক্টেই দুই-তিন বছরের ওয়ারেন্টি থাকে। তাই, পরবর্তীতে নস্ট হলেও, ফ্রি-তে মেরামতের একটা সুযোগ থাকছে।
তবে একদম সস্তায় কিনতে চাইলে ফ্লো মার্কটে ঢু মারতে পারেন। কিন্তু এইক্ষেত্রে কোয়ালিটি আর ডিউরেবলিটির রিস্ক পুরাই আপনার।
দুর হয়ে যাক গ্রীষ্মের দাবাদহ। শীতল হাওয়ায় জুড়িয়ে যাক আপনার প্রাণ। 🙂 🙂 🙂
http://www.conrad.de/ce/
http://www.saturn.de/
http://www.mediamarkt.de/
http://www.notebooksbilliger.de/
http://www.ebay.de/