বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এখানে কারো নাম উল্লেখ করা হয় নি। আমি কাউকে ছোট করতেও চাই না। কাউকে ছোট করে কেউ বড় হতে পারে না। শুধু সবাইকে সচেতন করতে চাই। বাকিটা সবার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ধন্যবাদ।

ভায়েরা আমার, আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবই জানেন এবং বোঝেন। দুঃখের বিষয়, আজ একজন জার্মান প্রবাসী ঠগের কথা আপনাদের বলতে হচ্ছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত স্টুটগার্ট(মতান্তরে মিউনিখ) প্রবাসী জার্মানির স্বঘোষিত এম্ব্যাসেডর, স্বঘোষিত একমাত্র সফল ব্যক্তিত্ব, আমাদের সেই ভাইয়ের স্পন্সরশীপের(Sponsorship) কবলে পড়ে প্রায় ৩ জন(বা ৪ জন) শিক্ষার্থীকে জার্মানি ছেড়ে যেতে হয়েছে। নিশ্চয়ই আপনার মনে প্রশ্ন আসছেঃ কী, কেন, কীভাবে? তাহলে চলুন দেখে নেই কীভাবে হচ্ছে এটি।

বিজ্ঞপ্তিঃ

বাসা নিয়ে প্রতারণা – Lesson Learnt – Experience Summer’2015

ব্লকড একাউন্টের বদলে স্পন্সরশীপের(Sponsorship) টোপ

আমাদের সেই মহান বড় ভাই মহানুভবতার দোহাই এবং ব্লকড একাউন্ট এর বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে টার্গেট স্টুডেন্টকে স্পন্সরশীপের আশ্বাস দেন। যেহেতু জার্মানিতে পড়তে আসা অধিকাংশ ছেলে-পেলেই মধ্যবিত্ত ঘরের, তাঁদের কাছে এটা যেন মেঘ না চাইতে বৃষ্টি। কিন্তু হায়, যদি জানত এ যে এসিড বৃষ্টি! এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে টার্গেট স্টুডেন্ট সেই মহান বড় ভাইয়ের টোপ নেন এবং জার্মানিতে পড়তে চলে আসেন। মজার ব্যাপার হল তখন পর্যন্ত সেই বড় ভাই শুধু এটাই বলতে থাকেন যে, এই সাহায্য শুধুমাত্র তাঁর বিগলিত হৃদয়ের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। এর মাঝে কোন স্বার্থ জড়িত নেই। আহা! কতটা দিলদরিয়া তিনি!

জার্মানিতে আসার পরের অবস্থা

জ্বি, পরিস্থিতি হতে পারে এই গরিলার মতই ভয়ংকর! এখন যা হবে তা হলঃ আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ুন না কেন, হাবি-জাবি, যদু-মধু-কদু বুঝিয়ে তাঁর পরের লক্ষ্য হল টার্গেট স্টুডেন্টকে নিজের বাসায় নিয়ে আসা এবং “তথাকথিত অফিসের নাম করে নেয়া রুমটি”কে বাসা হিসেবে সেই স্টুডেন্টটিকে ভাড়া দেয়া।  উল্লেক্ষ্য তিনি বাসা ভাড়া ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে গ্রহণ করবেন না। তিনি হাতে হাতে ক্যাশ নিবেন যাতে ট্যাক্স এবং অন্যান্য ঝামেলাকে ফাঁকি দেয়া যায়। অথচ স্টুডেন্টটি তার পছন্দের সাবজেক্ট/শহর ছেড়ে এখানে কী কারণে আসবে তা যথেষ্ট যৌক্তিক নয়। এছাড়া, পার্ট-টাইম চাকরি বা স্টুটগার্টেই(বা মিউনিখেই) বা সে কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করবে সেটার ধারনা স্টুডেন্টটির না থাকলেও, আমাদের উল্লেখ্য বড় ভাইয়ের আশ্বাসে পড়ে টার্গেট স্টুডেন্ট যথারীতি সেখানেই পাড়ি জমায়।

এতটুকু হলে তাও ঠিক ছিল। পরবর্তী ধাপে তিনি তাঁর পার্সনাল কাজগুলো সেই টার্গেট স্টুডেন্টকে দিয়ে করাবেন। সেই স্টুডেন্টের সময় থাকুক না থাকুক, ভাল লাগুক না লাগুক, করতেই হবে। কারণ সে যে স্পন্সরশীপ এর জালে বাঁধা। কিছু হলেই “বলির পাঠা” স্টুডেন্টটিকে ভয় দেখানো হবে স্পন্সরশীপ তুলে নেয়ার। তবে বড় ভাইটি এত খারাপও নয়! প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে আমাদের শ্রদ্ধেয় বড় ভাই পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সেই স্টুডেন্টটিকে নিজের বাসার টয়লেট পরিষ্কার করার জন্যও আহ্বান করে থাকেন।

এমতাবস্থায় যা হওয়ার তা-ই হয়। টার্গেট স্টুডেন্টদের “নার্ভাস ব্রেকডাউন” ঘটে। নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করতে করতে একসময় সে এই ব্যাপারে বিদ্রোহ করে। ফলে বড় ভাই তাঁর প্রদত্ত স্পন্সরশীপের ছায়া তুলে ফেলেন অর্থাৎ স্পন্সরশীপ ক্যান্সেলের ধমক দেন। এছাড়া Rathaus এ গিয়ে অভিযোগ করার হুমকিও দেয়া হয়। এই খপ্পরে পড়ে অন্যান্য অনেক উপায় থাকা সত্ত্বেও প্রায় বিদ্ধস্ত মানসিক অবস্থায় ৩ থেকে ৪ জন শিক্ষার্থী জার্মানি থেকে বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। অথচ এরকম হওয়ার কথা ছিল না। সেই সকল স্টুডেন্টদের মাঝেও ছিল উজ্জ্বল সম্ভাবনা। কিন্তু ভুল পদক্ষেপ আর ক্যালকুলেশনে তারা হারিয়ে গেল/যায় অতল গহ্বরে।

আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ার পরে সবাই সতর্ক হবেন এবং যদি স্পন্সরশীপ নেনও অন্তত দুই থেকে তিনজনকে ইমেল বা মেসেজ থ্রেডে রাখবেন যাতে কেউই পরবর্তীতে ধান্ধাবাজি করতে না পারে। তারপরও আমরা বলব এই ফাঁদে পা দিবেন না। নিজে সতর্ক থাকুন, বাকিদের সতর্ক করুন। তা না হলে নিচের সবুজ কুমিরের মত তা আপনাকে তাড়া করে ফিরবে আজীবন! ধন্যবাদ। 🙂

কৃতজ্ঞতাঃ ৭ই মার্চের ভাষণ, জার্মান প্রবাসে, ওয়েব জিফ, ইন্টার্নেট

জার্মানিতে এপ্লাই করার ধাপসমূহ

আরো কিছু তথ্যসূত্রঃ

  • “According to §§ 66 ff of the Residence Act, as the guarantor you are liable for any costs (e.g. sickness costs, possible deportation costs, social benefits) incurred in the Federal Republic of Germany by your visitor until the date of his or her departure. The immigration office must examine your financial circumstances in order to guarantee any repayment obligation that may arise. Specific reference is made to the fact that the guarantor alone is responsible for assessing the trustworthiness of a guest before a visa is issued. The declaration of obligation cannot be retracted after the visa has been issued. The collection and transmission of personal data is carried out on the basis of §§ 86 and 87 of the Residence Act.”

  • Screenshot_310
  • Screenshot_311

সময় থাকতে সাবধান হন-বিপদ “is knocking at the door”

আরো পড়তে পারেন

mm

By Rashidul Hasan

Founder and currently coordinator of the largest community platform of Bangladeshi people in Germany, named ''Bangladeshi Student and Alumni Association in Germany'' (www.facebook.com/groups/BSAAG) and GermanProbashe.