বেশ কয়েক মাস আগে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে একটা ট্রিপে গিয়েছিলাম। একটা স্টুডেন্ট ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে প্রায় ২০০ জন ছেলে-মেয়ে সেই ট্রিপে গিয়েছিল। আটঘন্টার বাস ভ্রমন শেষে সকাল ৯ টায় পৃথিবী বিখ্যাত শহর জুরিখে পৌছালাম। জার্মানি, ফ্রান্স বা নেদারল্যান্ডসে ২০ ইউরো দিয়ে দুইবেলা পেট পুরে খাওয়া যায়। তাই ২০ ইউরো বাজেট নির্ধারণ করেছিলাম যার সুইস মুল্য ২২ ফ্র্যাংকের মত। ঘন্টা তিনেক হাটাহাটি শেষে আমি ও আমার উজবেক ফ্ল্যাটমেট ম্যাকডোনাল্ডসে গেলাম দুপুরের খাবার খেতে। আমরা একটা করে বার্গার মেন্যু অর্ডার দিলাম। একটা মাঝারী সাইজের বার্গার ও এক গ্লাস কোলা কিনতে ১০ ফ্রাঙ্কের মত খরচ হলো। দুজনেরই পুরা টাস্কি খাওয়া অবস্থা। অন্যান্য দেশে সর্বোচ্চ ৬ ফ্র্যাঙ্ক ব্যয় হতো। যাইহোক, স্বান্তনা পুরস্কার হিসেবে পেলাম ১ ঘন্টার ফ্রি হাইস্পিড ওয়াইফাই।

সারাদিন ঘোরাফেরা শেষে রাত আটটার দিকে একটা তার্কিশ রেস্টুরেন্টে গেলাম। ৪ ইউরোর ডোনারের দাম ১২ ফ্রাংক দেখে কলিজা শুকিয়ে গেল। ১০ মিনিটের মত গবেষণা শেষে একটা ডোনার বক্স অর্ডার করলাম। আমার ফ্ল্যাটমেট মাত্র কয়েকমাস আগে জার্মানিতে এসেছে। সে তখনও সবকিছু উজবেক মুদ্রায় কনভার্ট করে হিসাব করত। অনেক কষ্টেও ওকে রাজি করাতে পারলাম না কোন খাবার কিনতে। একা একা খাব নাকি অর্ডার বাতিল করব, দ্বিধায় পড়ে গেলাম। হঠাত দেবদুতের মত আবির্ভাব ঘটল আমার পরিচিত ৩ জন বাঙ্গালী ছেলের। তাদের সাথে একই টেবিলে বসে খেলাম। তাদের কাছে থাকা পানির বোতল থেকে পানি পান করলাম!

সেখানে যাবার আগে এক প্যাকেট কুকিজ ও কয়েকটা কলা নিয়ে গিয়েছিলাম ব্যাগে করে। বাসে চেপে ফেরার পথে আমার ফ্ল্যাটমেট সেগুলো খেয়ে সারারাত পার করে দিল।

আমার দেখা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশ হচ্ছে সুইজারল্যান্ড। সেখানে যাবার আগে জিনিসপত্রের দাম আগাম জেনে যাবেন। নইলে আমাদের মত বেকুব বনে যেতে হবে!

mm

By Shariat Rahman

আমি বর্তমানে রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অফ এপ্লায়িড সাইন্সে সায়েন্টিফিক এসিস্ট্যান্ট (Wissenschaftlicher Mitarbeiter) হিসেবে কাজ করছি। ২০০৯ সালে বুয়েট থেকে আইপিইতে ব্যাচেলর আর ২০১২ সালে রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অফ এপ্লায়িড সাইন্স থেকে বায়োনিক্সে মাস্টার্স সম্পন্ন করি। অবসর সময়ে সোস্যাল মিডিয়া, আড্ডাবাজি আর খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করি।

Leave a Reply