এই উইন্টারে অনেকেই বাংলাদেশ থেকে জার্মানি আসছেন প্রথম বারের মতো। তাদের প্রায় সবার একটা কমন প্রশ্ন থাকে আসার সময় সাথে কি কি নিয়ে আসবেন, বা কি কি দেশ থেকে নিয়ে আসলে ভালো হবে? নিজের ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে এই পোষ্টে চেষ্টা করবো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দরকারি জিনিস যা মনে পড়ে তা উল্লেখ করার।

১) ইমার্জেন্সি শীতের কাপড় সাথে নিয়ে আসুন যেনো অন্তত ১ সাপ্তাহ চলতে পারেন। পরে এখান থেকে যা লাগে কিনে নিতে পারবেন। বাংলাদেশ থেকে খুব একটা বেশি দাম নয় আর যদিও হয়, কোয়ালিটি ভালো থাকে। মোজা টেডিতে ১ ইউরোতে ৩ জোড়া পাওয়া যায়। জ্যাকেট ২০ থেকে ৫০ ইউরো রেঞ্জে ভালো পাবেন। প্যান্ট ও আহামরি বেশি দাম নয়। তবে জুতা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসতে পারেন, বাটার যে ২ জোড়া আমি আনছিলাম মাত্র ৩৫০০ টাকায় তা এখানে একই কোয়ালিটির কিনতে গেলে ১০০ ইউরো গুনতে হবে।

২) একটা প্লাস্টিকের বদনা নিয়ে আসেন, এখানে এই জিনিস গুপ্ত ধনের মতো রেয়ার। :p

৩) যতো পারেন মসলা নিয়ে আসেন। এখানের মসলা ভালো লাগেনা।

৪) যদি গুড়ো দুধের ফেন হয়ে থাকেন তাহলে গুড়ো দুধ আনতে পারেন। এখানে বেশিরভাগই তরল নয়তো বাচ্চাদের গুড়ো দুধ।

৫) কফি নিয়ে আসতে পারেন। এখানে বেশিরভাগই ব্লাক কফি। হোয়াইট কফি চিনে কিনতেও প্রথম দিকে প্যারা নিতে হতে পারে যদি পরিচিত কেউ না থাকে। চা পাতা ও চাইলে আনা যায়।

৬) শুটকি প্রেমি হলে ভালো করে পলিথিন দিয়ে প্যাক করে নিয়ে আসতে পারেন। যদিও এটা কাস্টমস এ ধরা খাইলে রেখে দিবে। এই খাবারটা এখানে যদি পানও, অনেক দাম নিবে।

৭) আচার খাওয়ার শখ থাকলে সেটাও আনতে পারেন।

৮) পান/সুপারি/সিগারেট যদি খাওয়ার অভ্যাস থাকে সেটা ছেড়ে দেওয়া উত্তম। পান/সুপারি এখানে পাবেন না, আর সিগারেট এর আকাশ ছোয়া দাম। :3

৯) হাড়ি পাতিল বা রান্নার আসভাব পত্র কে সেকন্ডারি প্রায়োরিটিতে রাখেন। যদি এদের থেকে অধিক মূল্যবান কিছু নিয়ে আসার প্লান থাকে সেটা আনেন। এখানে সবই পাওয়া যায়। দামও খুব একটা বেশি না।

১০) যদি নিয়মিত পার্ফিউম ব্যাবহারের অভ্যাস থাকে তাহলে দেশ থেকে আপনার পছন্দের ব্র‍্যান্ড এর পার্ফিউম নিয়ে আসেন।

১১) বেশি করে খাতা/কলম নিয়ে আসুন। এখানে খাতার দাম অনেক বেশি। কলম যদিও ইউনিভার্সিটি এর বিভিন্ন প্রোগ্রামে দিয়ে দেয় তবুও সাথে নিয়ে আসা সেইফ। একটা সাইন্টিফিক ক্যাল্কুলেটর অবশ্যই নিয়ে আসবেন যদি আপনি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স এ আসেন। এখানে পাওয়া যায় তবে দাম অনেক বেশি।

১২) একটা ভালো দেখে ওজন মাপার স্কেল নিয়ে আসুন। দূরে কোথাও যাইতে হইলে আপনার লাগেজের উজন মাপা লাগতে পারে তখন কাজে লাগবে। সাথে মিটার মাপার ফিতা ও আনতে পারেন।

১৩) স্কচ টেপ আনতে পারেন কিছু।

১৪) বোর্ড গেম খেলার অভ্যাস থাকলে দেশ থেকে নিয়ে আসতে পারেন। এখানে দাম বেশি।

১৫) প্রয়োজনীয় কম্পিউটারের সফটওয়্যার সাথে করে নিয়ে আসুন।

১৬) যদি ত্রিপিন চার্জার কোনো ডিভাইস থাকে তাহলে একটা ত্রিপিন টু টুপিন মাল্টি প্লাগ নিয়ে আসবেন। এখানে সব টুপিন।

১৭) অবশ্যই আপনার ১০/২০ কপি এম্বেসি সাইজ ছবি নিয়ে আসবেন। ছবি কাজে লাগে।

১৮) একটা ভালো মানি ব্যাগ নিয়ে আসতে পারেন কয়েন আর কার্ড গুলো ক্যারি করার জন্য। ক্যাশ এ সপিং করলে অনেক কয়েন ক্যারি করা লাগতে পারে।

১৯) সব শেষে একটা ফার্সট এইড কিট আর কিছু ইমার্জেন্সি ওষুধ সাথে নিয়ে আসবেন।

আপাতত এটুকুই মাথায় আসছে। এই লিস্টের বাইরা আর কিছু যদি কারো মনে আসে, কমেন্ট সেকশনে উল্লেখ করে বাধিত করবেন। আসলে এখানে আসার পর যে জিনিস গুলো না নিয়ে আসলে মনে হতে পারে কেনো আনলাম না? তা প্রায় ক্ষেত্রে দেখা যায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নগন্য অথচ দরকারি জিনিস গুলো যা সচরাচর আমাদের খেয়াল হয়না।

ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্য৷ নতুন দের জন্য – Viel Gluck! 🙂

বিঃদ্রঃ এই লিস্টের অনেক কিছুই হুবহু না থাকলেও সিমিলার অনেক সিটিতে আছে। আপনি যে সিটিতে আসছেন আগে থেকে সেই সিটির ব্যাপারে খুজ খবর নিয়ে আসার চেষ্টা করেন।

mm

By টিম জার্মান প্রবাসে

আমি জার্মান প্রবাসে! আপনাদের সাথে ছিলাম, আছি, থাকব! :)

Leave a Reply