Nuruzzaman Milon

একটা ভিন্ন অভিজ্ঞতা হলো গত দুইদিনে। আমি মনে করি, সেটা শেয়ার করলে সবাই উপকৃত হবে, তাই এই পোস্ট।

গত ডিসেম্বরের শেষে আমি আমার স্ত্রী-পুত্রকে জার্মানীতে নিয়ে আসি। আসার সময় আমরা কিছু ঔষধও নিয়ে আসি, তবে কয়েকটি ঔষধ বাদ পড়ে যায়, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এসিডিটির ঔষধ। আমার স্ত্রী বিশেষ করে নিওট্যাক(রেনিটিডিন) ট্যাবলেটটা খায় এসিডিটির সমস্যার জন্য। কিন্তু ব্যস্ততার কারনে আমরা সেটা আনতে ভুলে যাই। এর এক সপ্তাহ পরেই যেহেতু আমার স্ত্রীর বড় বোন বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডে আসবেন, তাই উনাকে আমরা অনুরোধ করি যেন কয়েক পাতা নিওট্যাক সাথে করে নিয়ে আসেন। উনি তা নিয়ে আসেন এবং সুইজারল্যান্ড থেকে ডাকে আমার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন। সেই প্যাকেটে ঔষধ ছাড়াও অন্যান্য জিনিশ ছিল। আমি দুই দিন পরে প্যাকেটটা হাতে পাই, খুলে দেখি ঔষধ ছাড়া বাকি সব কিছু ঠিক-ঠাক আছে। আর ঔষধের বদলে একটা চিঠি পাই। সেখানে লেখা ছিল ঔষধটি যেহেতু জার্মানিতে প্রচলিত না, তাই তারা ঔষধটি রেখে দিয়েছে। তখন আমি আর বিষয়টাতে গুরুত্ব দেই নি। গত শুক্রবার বিকালে Rhinelandpfalz স্টেটের Landesamt für Soziales, Jugend and Versorgung কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটা চিঠি পাই, অত্যন্ত কঠিন ডয়েচে লেখা সেই চিঠি গুগল ট্রান্সলেটে ট্রান্সলেট করেও এর অর্থ পরিষ্কার হয় না। তবে কয়েক জায়গায় ২৫,০০০€ পর্যন্ত ফাইনের কথা বলা আছে। আমার স্ত্রীর বড়বোন প্রায় ৬ বছর ধরে সুইজারল্যান্ডে আছেন, এবং উনি ডয়েচে ফ্লুয়েন্ট। উনিও চিঠিটা পড়ে ক্লিয়ার হতে পারেন নি।

তো পুরো উইকেন্ড টেনশনে কাটিয়ে আজকে আমার অফিসের এইচআরকে চিঠিটা দেখাই। তিনি আমাকে সব কিছু পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দেন। যেহেতু এই ঔষধটি জার্মানিতে প্রচলিত না, তারা এটিকে নষ্ট করে ফেলেছেন, আর আমি যদি এটিকে ফেরত পেতে চাই তাহলে আমাকে Landesamt für Soziales, Jugend and Versorgung কর্তৃপক্ষের কাছে আপীল করতে হবে। আর আমাকে যেহেতু ঔষধটি কোন অনলাইন ফার্মেসী বা হাসপাতাল থেকে পাঠানো হয় নি, একজন প্রাইভেট পার্সন এটা পাঠিয়েছে, আমি তাদের সাস্পিশনে আছি। প্রথমবার বলে তারা আমার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় নাই, তবে ভবিষ্যতে এমন হলে ২৫০০০€ পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। ওই চিঠিকে ওই অফিসের একজন মহিলার ফোন নাম্বার দেয়া ছিল, এবং কল করার সময় হিসেবে প্রতি সোম আর মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত সময় দেয়া আছে। একটু আগে সেই নাম্বারে কল করি, কিন্তু সেই মহিলা ইংরেজি বলতে পারেন না। পরে উনার এক কলিগের সাথে কথা বলি, উনাকে সব বলার পরে উনি বুঝতে পারেন। তবে আমাকে আবার সাবধান করে দিয়ে বলেন, তুমি আইন জানো না, এটা তোমার দোষ, আইনের না। তুমি যেহেতু এ দেশে আছো, এই দেশের আইন জানা তোমার কর্তব্য। আমি আর কি বলবো, স্যরি বলে আর এমন হবে না বলে ফোন রেখে দেই।

একটা কথা গুরুত্বপূর্ণ এখানে, বাইরে থেকে কোন কিছু এখানে আনতে হলে সাবধান হয়ে নিন। এমনকি আপনার সাথে করে দেশ থেকে কোন ঔষধ আনতে চাইলে পরিচিত কোন ডাক্তারকে দিয়ে প্রেসক্রিপশন লিখিয়ে সাথে করে নিয়ে আসুন। আর ভুলেও ডাকে ঔষধ আনার চিন্তাও করবেন না। অযথা ঝামেলা এড়িয়ে চলুন, ভালো থাকুন।

mm

By Nuruzzaman Milon

Birth, childhood everything is in Dhaka. Got education from Shamsul Haque Khan High School and Dhaka College. Then went to Mawlana Bhashani Science and Technology University to study Information and Communication Technology. I have interest in every single thing on the earth except formal education. Loved to be in touch with computer and technology. Had a weakness on computer programming. Recently very excited with cars. Currently working in a German company as a Senior Software Engineer and living in Münster, NRW. Recently I become a father of a beautiful prince. I am a proud Bangladeshi.

Leave a Reply