জাতিগতভাবে আমাদের প্রথম স্বর্গ আমেরিকা দ্বিতীয় স্বর্গ কানাডা। আমি সিলেটি সুতরাং আমার ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম,আমাদের একমাত্র স্বর্গ লন্ডন :p ( নাউজুবিল্লাহ)
যাই হোক বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ বিশ্বাস করে প্রথম সারির স্টুডেন্টরা আমেরিকা যায়,তার পরের সারির স্টুডেন্টরা কানাডা তারপর যারা চিপাচাপা দিয়ে রয়ে যায় তারা যায় ইউরোপ। কথা সত্য হতেও পারে কারণ নর্থ আমেরিকার লাইফস্টাইল,ফিউচার প্রস্পেক্ট,ডিগ্রী এইসব কারণে সব মেধাবীরা হয়তো ঐসব দেশে বেশী যায়। তো আমাদের মতো ব্রোকেন বাসমতিদের কি হবে এখন?
আমি নিজে একজন ব্রোকেন বাসমতি।কপালগুণে একটা কানাডিয়ান ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে গিয়েছিলাম ফান্ডসহ (যদিও আংশিক)। যাইনি অনেকগুলা কারণে,তারচেয়ে জার্মানি আসার সিদ্ধান্ত নিলাম ২০১৭ সালে। কিন্তু আমার এই সিদ্ধান্ত কেউ মেনে নিতে পারলো না,অনেকে বললো বিশাল বড় ভুল করছি,কেউ কেউ তো অফার লেটার পর্যন্ত দেখতে চাইলো। কিছুদিন আগে এই গ্রুপেরই এক ভাই যাকে মাঝেমধ্যে হেল্প করি, ইনবক্সে নক দিয়ে বললো ভাই আপনার জীবনটা তো নষ্ট করে ফেললেন। আমি শুয়ে ছিলাম, এক লাফে উঠে গেলাম, কি রে আমার লাইফ নষ্ট হয়ে গেল আর আমি জানিনা! কোন স্ক্যান্ডেল ট্যান্ডেল বের হয়ে গেল নাকি!! ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম কেন ভাই কি হয়েছে? সে উত্তর দিলো আপনার প্রোফাইল তো ভালো,আপনি কানাডা/আমেরিকা গেলেন না কেন?বিশাল বড় ভুল করে ফেলেছেন। যাই হোক এক গ্লাস ঠান্ডা পানি খেয়ে বললাম,আসলেই ভাই,এখন কি করা যায়?
কেউ যদি তার উপর জিআরই নামক এক্সামটা দেয় এবং মোটামুটি ভালো স্কোর করে কিন্তু নর্থ আমেরিকা না গিয়ে জার্মানি চলে আসে তাদের তো আর রক্ষা নেই। একশো বার উত্তর দিতে হবে কেন আপনি জার্মানি গেলেন,তাহলে জিআরই দিলেন কেন? উত্তরটা হবে,স্যরি ভাই ভুলে দিয়ে দিছিলাম।মাফ চাই।
আমি কোন দেশের মধ্যে বা মহাদেশের মধ্যে কম্পেয়ার এ যাচ্ছি না,কম্পেয়ার জিনিসটা খুব খারাপ কারণ সবারই নিজস্বতা আছে। তবে মনে হয় না যারা জার্মানিতে এসেছে তারা খুব কষ্টে আছে।একটা ফুলটাইম জব পেলেই আস্তে ধীরে সিটিজেনশিপ পেয়ে যাবেন একদিন,সময় হয়তো কয়েকটা বছর বেশীই লাগলো অন্য দেশের তুলনায়। এইটা ঠিক ল্যাংগুয়েজ শিখা এক্সট্রা পেইন,কিন্তু ল্যাংগুয়েজ তো এক্সট্রা একটা স্কিল। স্কিল তো ডেভেলাপ করতেই হবে আপনি যে দেশেই যান।
আপনি এইখানে স্টুডেন্ট অবস্থার ইনকাম দিয়ে আরামের লাইফ লিড করতে পারবেন, ওয়ার্ল্ডক্লাস একটা ডিগ্রী পাবেন, ভিসা ছাড়া ২৬টা দেশ ঘুরতে পারবেন, মাঠে বসে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ দেখতে পারবেন, সস্তায় সূরা পান করতে পারবেন :p মাস শেষে দেশে হালকা পাতলা টাকা পাঠাতে পারবেন আর কি লাগে?
অবশ্য আপনি যদি স্টুডেন্ট অবস্থায়ই দেশে ৫ তলা বিল্ডিং বানাতে চান তাহলে বলতেই হয় এই দেশ আপনার জন্য না।
আমি এই সাইটে আজ হঠাৎ ঢুকলাম। বিভিন্ন তথ্য দেখতে দেখতে তোমার লেখাটা পড়ে বেশ মজা পেলাম 🙂 :)। সুন্দর লিখেছ। তোমার আরো কয়েকটা লেখা সহ অন্যান্য বেশ কিছু লেখা পড়ে ভালো লাগল।
ভাই শেষের লাইন নিয়ে বলছি—-
তার মানে কি আমেরিকা, কানাডা গেলে স্টুডেন্ট লাইফে ৫ তলা বাড়ি বানানো যায়?আমার কাছে তো খুব বেশি পার্থক্য চোখে পড়লো না। আমেরিকা তে ইনকাম একটু বেশি, তেমনি লিভিং এক্সপেন্স ও তো বেশি।
নো অফেন্স।