কয়েকদিন আগে স্টুটগার্টে একটা কাজে গিয়েছিলাম। রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় দেখি, একজন মধ্য বয়স্ক মহিলা একটা টেবিল ও চেয়ার নিয়ে ফুটপাতের উপর পসরা বসিয়েছেন। আশেপাশে অনেকগুলো লিফলেট ঝুলানো ও রাস্তার উপর দাঁড় করানো। কৌতূহলী আমি এগিয়ে গেলাম তার দিকে। জানতে পারলাম, তারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল শুরু করেছেন। তারই ক্যাম্পেইন চলছে। মিনিট বিশেক ধরে গল্প করলাম। সারাংশ হচ্ছে- “পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে তাদের এই লড়াই। সবার জন্য সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলাই তাদের লক্ষ্য। আর জার্মানীর অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। কমপক্ষে ৩৫ হাজার ব্রিজ যেকোন মুহুর্তে ভেঙে পড়তে পারে, অটো বানগুলো ( হাইওয়ে) আন্তর্জাতিকমানের না। দেশ পিছনের দিকে আলোর বেগে এগিয়ে যাচ্ছে।”
শেষে প্রচন্ড আবেগাপ্লুত হয়ে নিজের নাম, ঠিকানা ও ফোন নাম্বার দিলাম, কিন্তু সামর্থ্য না থাকায় কোন পয়সা দান করলাম না।

কালকে দুরপাল্লার বাসে চেপে নিজের শহরে ফিরছি। হঠাত একটা ফোন কল এল। ভাবলাম, কোন কোম্পানি থেকে ইন্টার্ভিউয়ের অনুরোধ হয়তো। খুশি মনে ফোন ধরে টের পেলাম, সেই মহিলা ফোন করেছেন। ফ্রাঙ্কফুর্টে একটা সেমিনার আছে দুইদিন পরে, যোগ দিলে তারা খুশি হবেন। যাইহোক, কথা শেষে শুরু হলো আসল পীড়া। মনে পড়ে গেল কয়েকদিন আগের কথা।
আমাদের বাস কোন ব্রিজের উপর বা নিচ দিয়ে গেলেই ইয়া নফসি পড়ি, এই বুঝি পটল তুলব। দীর্ঘদিনের ভাললাগার অটোবান পানসে লাগতে শুরু করল, “ধুর, এটা কোন অটোবান হলো! একেবারেই নিম্নমানের। ইঞ্জিনিয়াররা সব টাকা মেরে দিয়েছে। জার্মানীর কোন ভবিষ্যৎ নাই রে পাগলা”

বাসায় ফিরে সিদ্ধান্ত নিলাম, এই দেশে আর থাকুম না। ব্রিজের নিচে চাপা খাওয়ার চেয়ে দেশে হালচাষ করা বেশি স্বস্তিদায়ক। 😛

mm

By Shariat Rahman

আমি বর্তমানে রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অফ এপ্লায়িড সাইন্সে সায়েন্টিফিক এসিস্ট্যান্ট (Wissenschaftlicher Mitarbeiter) হিসেবে কাজ করছি। ২০০৯ সালে বুয়েট থেকে আইপিইতে ব্যাচেলর আর ২০১২ সালে রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অফ এপ্লায়িড সাইন্স থেকে বায়োনিক্সে মাস্টার্স সম্পন্ন করি। অবসর সময়ে সোস্যাল মিডিয়া, আড্ডাবাজি আর খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করি।

Leave a Reply