১/১ এ রশিদ হলে আমাদের চার/পাঁচ জনের একটা গ্রুপ ছিল। প্রায় সবাই গ্রাম থেকে আসা। স্বাভাবিকভাবেই কলেজ জীবনে শুধু আতলামি করেই কাটিয়েছি। বুয়েটে এসে কেন যেন বদলে গেলাম। ক্লাস ঠিকমত করলেও টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার আগে কোন বিকার নেই। দুদিন পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরীক্ষার শুরু, অথচ আমরা সারারাত ধরে টিভি কক্ষে ক্যারাম খেলেই যাচ্ছি, মাঝে মধ্যে হিন্দি মুভি দেখছি। একবার বলেই ফেললাম, “ধুর শালা, কই আসলাম! পরীক্ষা নিয়ে কোন অনুভূতি নেই। এইডা কিছু হইল?”

ফলাফল যা হবার তাই হলো। আমি ৩.২৭ পেলাম। ইলেক্ট্রিক্যালের বন্ধু ৩.৪৫ আর মেকানিক্যালের সে পেল ৩.৫ এর নিচে। বাকিদের গ্রেড মনে নাই।

পরের টার্ম থেকেই সবকিছু বদলে গেল। আমাদের আড্ডা টিভিরুম থেকে ক্যান্টিনে চলে এল। তবে পড়াশুনার ব্যাপারে সবাই প্রচন্ড সিরিয়াস হয়ে গেল। আমি বিভিন্ন কারণে না পারলেও বাকিটা তাক লাগানো রেজাল্ট নিয়ে পাশ করেছে।
আমাদের একজন জার্মানীতে স্কলারশিপ নিয়ে মাস্টার্স করতে এসে একটা স্বনামধন্য ইউনির সর্বকালের সেরা মাস্টার্স স্টুডেন্ট এওয়ার্ড পেয়েছে। এখন আরেকটা বিশ্ববিখ্যাত ইউনিতে পিএইচডি করছে। আর মেকানিক্যেলের বন্ধুটি অস্ট্রেলিয়াতে মাস্টার্স শেষ করে পিএইচডি করছে।

আমরা ২য় টার্মেই নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছিলাম। বন্ধুত্ব বজায় রেখেও ছাত্রজীবনে দ্রুত উন্নতি করা যায়, ওরা এটার উজ্জ্বল উদাহরণ।
আমি প্রচন্ডভাবে বিশ্বাস করি, “আমাদের ফর্ম টেম্পোরারি হতে পারে, কিন্তু ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট।”

তো, আজ থেকেই শুরু হোক সবার নতুন করে পথ চলা।
“আমরা করবো জয় একদিন”

mm

By Shariat Rahman

আমি বর্তমানে রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অফ এপ্লায়িড সাইন্সে সায়েন্টিফিক এসিস্ট্যান্ট (Wissenschaftlicher Mitarbeiter) হিসেবে কাজ করছি। ২০০৯ সালে বুয়েট থেকে আইপিইতে ব্যাচেলর আর ২০১২ সালে রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অফ এপ্লায়িড সাইন্স থেকে বায়োনিক্সে মাস্টার্স সম্পন্ন করি। অবসর সময়ে সোস্যাল মিডিয়া, আড্ডাবাজি আর খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করি।

Leave a Reply