যারা বাংলাদেশ থেকে নতুন পাসপোর্ট করবেন তাদের জন্য অসম্ভব দরকারি একটা পোস্ট। ধন্যবাদ লেখাটা আমাকে শেয়ার করবার জন্য। এই লেখাটা শুধুমাত্র এই গ্রুপ এর জন্য দিয়েছেন তাই দয়া করে কেউ অন্য কোথাও পাবলিশ করলে কমপক্ষে আমাদের সৌজন্য দেবার অনুরোধ করছি।

পাসপোর্ট তৈরির অভিজ্ঞতা

জানিনা কারো কাজে আসবে কিনা এই লিখাটা। আমার মত যাদের পাসপোর্ট করতে গিয়ে নানান জন কে নানান প্রশ্ন করে পেরেশান হতে হয় তাদের বিড়ম্বনা কিছুটা হলেও কম হবে বলে আশা করি । কাজে নামার আগে মনে হয় “আরে কি এমন কঠিনকাজ ! হয়ে যাবে ব্যাপার না” । বাস্তবে কাজ টা করতে গিয়ে টের পেলাম ভালোই ঝামেলার কাজ। আসলে আমাদের দেশে সবকিছুই কঠিন, এখন তাই মনে হচ্ছে । কাজের কথায় যাই, যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে পড়ার জন্য বিদেশে যাবেন, তারা হাতে ১.৫ মাস হাতে নিয়ে পাসপোর্ট আবেদন সেরেফেলা ভালো । পড়াশুনা  মাঝে এই কাজের চিন্তা বাজে প্রভাব ফেলে । রেগুলারপাসপোর্ট আবেদন জমা দেওয়ার ২৫ দিনের ভিতর পাসপোর্ট বিতরণ করা হয় । তবে পুলিশ ভেরিফিকেসনে্রজন্য আরও একটু বেশি সময় লাগতে পারে । রিছেন্ট তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি লাগবে ।White Background এর ছবি, ছবিতে পোশাক অবশ্যই সাদা হতে পারবেনা ।

১। পাসপোর্ট অফিস আপনার এলাকা অনুযায়ী নিরধারিত থাকে । আপনাকে এটা জেনে নিতে হবে যে আপনার এলাকার জন্য কোন পাসপোর্ট অফিসটি প্রযোজ্য । সম্প্রতি পাসপোর্ট করেছেন এমন আপনার নিকটস্থ কারও কাছে থেকে জেনে নিতে পারেন যে আপনাকে কোন ব্যাংক এর কোন ব্রাঞ্চে টাকা জমা দিতে হবে।যেমন, আমি যাত্রাবাড়ির বাসিন্দা, এই এলাকার জন্য পাসপোর্ট অফিস রায়েরবাগে আর টাকা জমাদিতে হয় সোনালি ব্যাংক, যাত্রাবাড়ি ব্রাঞ্চে, অন্য ব্রাঞ্চে দিলে হবেনা । রেগুলারের জন্যে ৩০০০ টাকা, এক্সপ্রেস(জরুরি) এর জন্যে কত আমার জানা নাই (রেগুলারের থেকে বেশি)।টাকা জমার receipt টি হাল্কা গোলাপি রঙ এর । এটি যে কেউ গিয়ে জমা দিতে পারে, যার পাসপোর্টসে ছাড়া অন্য কেউ দিলেও হয় ।

২ । ফর্ম এর ধরনঃ হাতে-কলমে পূরণযোগ্য অথবা অন-লাইন আবেদন ফর্ম এই দুধরনের ফর্ম এ আবেদন করাযায় । আমারতো অন-লাইনে করলে ভুল হলে সংশোধন করা কঠিন হবে ভেবে দুই দিন সময় নষ্ট করেতারপর আক্কেল হইছিল যে অন-লাইনে করলেই সহজ হতো । হাতে-কলমে ফিল্আপ করলে অনেক সময় নষ্ট হয় আর ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বরং এই ক্ষেত্রে বেশি থাকে ।

৩ । অন-লাইনআবেদনের লিঙ্কঃ http://www.passport.gov.bd/

৪ । এই লিঙ্ক এ গিয়ে বাংলা (১-৭) নাম্বারপয়েন্ট এবং ইংরেজিতে দেওয়া ৫ টি পয়েন্ট ভাল করে পড়ে বুঝে নিয়ে তারপর    I haveread the above information and the relevant guidance notes   এই লাইনে এর খালি বক্সে টিক মারক দিয়ে তারপর ক্লিক করতে হয় “CONTINUE TO ONLINE ENROLLMENT” এইখানে ।

বিঃ দ্রঃ যদি “ACROBAT READER” না থাকে তাহলে I have readthe above information and the relevant guidance notes এই লাইন টির ঠিক আগের লাইনে download acrobat reader এই লিঙ্ক থেকে এটি install করে নিতে পারবেন।

৫ । ফর্ম ফিলাপের নিয়মঃ Applying In: এটা বাংলাদেশ হবে কারণ আমরা বাংলাদেশে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করছি । Passport type: ছাত্র-ছাত্রিদেরক্ষেত্রে অবশ্যই ordinary হবে । Delivery Type: Regular হবে যদি ব্যাংক এ ৩০০০ টাকা জমা দেওয়া হয়ে থাকে । নিজের নাম, বাবা-মার নাম, তাদের পেশা, জন্ম তারিখ এবং অন্যান্যসব ব্যক্তিগত তথ্য academic certificate এর সাথে অবশ্যই মিলতে হবে যদি supportingdocuments যেমনঃ National ID Card অথবা Birth Certificate এর কোনো তথ্য academic certificate এর সাথে না মিলে তাহলেও পাসপোর্ট ফর্ম এ সব তথ্য Academic Certificate অনুযায়ী পূরণ করতে হবে, বিশেষ করে নিজেরনাম, বাবা ও মায়ের নাম, জন্ম তারিখ ইত্যাদি । (*) মারককরা ঘর গুলো অনশ্যই পূরণীয় । Birth ID No, National ID No এই দুটির যে কোনো একটি ফিলাআপ করতে হয়, দুটোই করতে হয়না । Active E-Mail address দিতে হবে ।

৬ । এড্রেস (Present and Permanent): এইটা হলো সেই জিনিস যেটা নিয়ে পাসপোর্ট অফিস এবং পুলিশ ভেরিফিকেশনের মান্যগন্য লোকেরা হয়রানিকরে…।। বুঝে নেন কি টাইপ হয়রানি । present address তো যা তাই লিখতে হয় । কিন্তুPermanent Address অবশ্যই নিজের বাপের বাড়ির ঠিকানা দিতে হয় । মানে ঢাকাতে যদিpermanent address হয়ে থাকে সেটা নিজের বাপের নামের বাড়ি হলে তবেই তা দিতে  হয় । তা না হলে গ্রামের বাড়ির ঠিকানাই দিতে হয় ।আমি খুব ঝামেলায় পড়েছিলাম present আর permanent এড্রেস SAME দিয়ে । ঝামেলাটা এই রকম যে আমি মামার বাড়ির ঠিকানা দিলাম আমার পারমানেন্ট এড্রেস এর জায়গায় যিনি বিদেশে অবস্থান করছেন । আমি যেদিন পাসপোর্ট আবেদন জমা দিয়েছি সেদিনই পুলিশ ভেরিফিকেসন টা করিয়ে নিয়েছি। তখন পুলিশ আমার মামার National ID Card এর কপি দাবি করলো যা আমার কাছে নেই । পরে Gas bill, Telephone Bill, Electricity Bill এগুলোর ফটোকপি দিয়ে কাজ সারা গিয়েছে ।অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে “POLICE STATION” আর “POST OFFICE” এগুলো software এ সেট করাথাকে । এগুলো loading হতে একটু সময় নেয় এবং অনেকগুলো একসাথে দেওয়া থাকে, ধিরে ধিরেদেখে নিজের টা সিলেক্ট করতে হয় । ADDRESS পর্যন্ত সবকিছু ঠিক আছে কিনা আর একবার চেককরে “SAVE & NEXT” এ যেতে হয় । Emergency Contact- এই ক্ষেত্রে বাবার নাম দেয়া ভাল। আপনার relatives কারো contact দিতে পারেন।

Payment Information: অবশ্যই Receipt/ Transaction no. এই জায়গায় স্ক্রল(hand written) নাম্বার লিখতে হয়, ভুলেও ৬ ডিজিট এর টা না ।

সব কিছু ফিলাপ করা হয়ে গেলে পুনরায় সবকিছু ভালভাবে চেক করে নিয়ে তবে SUBMIT প্রেস করা উচিত। কারন SUBMIT প্রেস করার পর আর edit করা যায়না ।

৭ । এবার আপনার মেইল আড্রেসে যেতে হবে । Login Details আসবে । পাসপোর্ট ID Number এবং password পাবেন। পুনরায় http://www.passport.gov.bd/ এই ওয়েব এ গিয়ে Application ID এর জায়গায় মেইলএ প্রদত্ত ID Number এবং password বসিয়ে login করবেন । এবার আপনার পুরন করা ApplicationForm দেখা যাবে । এটি এবার Print করে নিন ২ কপি । প্রতিটির সাথে পাসপোর্ট সাইজ ছবি(সত্তায়িত) এবং আপনার জন্ম সনদ অথবা জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্তায়িত ফটোকপি যুক্ত করুন। যদি আপনার National ID or Birth Certificate এ ভুল থাকে তাহলে AcademicCertificate যে কোনো একটি অথবা তার বেশি ফটোকপি করে ফর্ম এর সাথে যুক্ত করে দিন । যথাযথভাবেSignature এবং Date দিন ফর্ম এ ।

*  যে সকল ব্যক্তিগণ পাসপোর্টের আবেদনপত্র ছবি প্রত্যায়ন সত্যায়ন করতেপারবেনসংসদ সদস্য, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলরগণ,গেজেটেড কর্মকর্তা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, উপজেলা পরিষদেরচেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র পৌর কাউন্সিলরগণ,বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, বেসরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক, নোটারী পাবলিক আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার জাতীয় বেতন স্কেলের ৭ম তদুর্ধ্বগ্রেডের গ্রেডের কর্মকর্তাগণ

৮ । এবার আপনার নিকটস্থ পাসপোর্টঅফিসে যাবার পালা । লাইন এ দাঁড়িয়ে আবেদনপত্র জমা দিন । সেখানে ছবি তোলার পর আপনাকেপাসপোর্ট এর Delivery Slip সরবরাহ করা হবে তাতে কবে আপনি পাসপোর্ট হাতে পাবেন তা উল্লেখকরা থাকবে । উল্লেক্ষ্য, Delivery Slip হস্তান্তরের পরে ফি ব্যতীত কোন প্রকার সংশোধনগ্রহনযোগ্য হবেনা ।

৯ । আপনার পাসপোর্ট এ যে সকলInformation থাকবে তা হল

Name:

Father’s Name:

Mother’s Name:

Permanent Address:

Emergency Contact:

Name:

Relationship:

Address:

Telephone(Mobile or landline) Number:

অপর পাতায় থাকবে

Country code:

Passport No.:

Personal Number: (either your National ID or Birth Certificateno.)

Surname: (ডাক নাম অথবা বংশের নাম যদি আপনার থাকে)

Given Name:

Nationality:

Gender:

Place of Birth:

Date of Issue (of the passport):

Date of Expiry (of the passport):

Holder’s Signature:

10 । পাসপোর্ট তৈরী হলে আপনাকে আপনার প্রদত্ত Mobile Number অথবা E-mail Address এ জানানো হবে । এছাড়া আবেদনের পর ২৫ দিনের কাছাকাছি সময় পার হলে অনুসন্ধানের জন্য ৬৯৬৯ নাম্বারে SMS পাঠাবেন এইভাবেঃ MRPENROLLMENT ID (জেমনঃ MRP 000000000000000) । ফিরতি sms এ আপনাকে জানান হবে পাসপোর্টOn Process মানে তৈরী হচ্ছে অথবা Your Passport is Ready to deliver এইরকম লিখা আসবে। পাসপোর্ট তৈরী হয়েছে জানার পর আপনি যে অফিসে গিয়ে ফর্ম জমা দিয়েছেন সেখান থেকে পাসপোর্টবুঝে নেবেন অবশ্যই Delivery Slip টি নিয়ে যাবেন ।

Shahanaz Sultana Risath
MBA (HRM), Batch: 16th
Department of Management
Faculty of Business Studies
University of Dhaka

mm

By Sultana Naz

পড়ছি/পড়বঃ জার্মান কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে! আপাতত কাজ করছি জার্মান প্রবাসে এবং Bangladeshi Student and Alumni Association in Germany এর হয়ে! :)

5 thoughts on “পাসপোর্ট তৈরির অভিজ্ঞতা – বাংলাদেশ”
  1. আমার যদি সিংগেল নাম হয়,কোন সার নেম যদি না হয় তাহলে কি আমি আপ্লিকেশন করতে পারব?

Leave a Reply to soleyman Cancel reply