Khadizatul Kobra Sonya

১৪ দিনে ভিসা পেয়েছি।
৬ নাম্বার কাউন্টারে পড়েছিল আমার। মধ্যবয়সী, চশমা পরা ফর্সা ভদ্রলোক। তেমন কিছুই জিজ্ঞেস করেনি আমাকে।

প্রথম প্রশ্ন ছিল এইচএসসি কত সালে পাশ করেছি এবং জিপিএ কত?
তারপর, বিএসসি সম্পর্কেও একই প্রশ্ন।
– ব্যাচেলর কোন সাবজেক্ট?
– যাচ্ছি কোন সাবজেক্টের জন্য?
– থাকব কোথায়?
– আমি জানি কি না ওই জায়গাটা কোথায়?
– আর কোথাও অ্যাপলিকেশন করেছি কি না?
– ওগুলোর ফলাফল?

তারপর ৭১০০ টাকা নিয়ে আমার মূল সার্টিফিকেটগুলো ফেরত দিয়ে বললেন, ধন্যবাদ।
আমি বললাম, এতটুকুই?
জবাবে বললেন, জি।

তারপর আমি নিজেই বললাম, আপনি কি ফিঙ্গার প্রিন্ট নিতে ভুলে গেছেন, স্যার!
হেসে বললেন, ও, হ্যাঁ!
ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে চলে আসলাম। খুব বেশি হলে চার মিনিট ছিলাম ভিতরে। কিন্তু এই চার মিনিটের জন্য আমাকে প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ১১টার স্লটে সবার শেষে আমার ভাইভা ছিল। সময় মনে হচ্ছিল যাচ্ছেই না! এত বিরক্ত লাগছিল যে কী বলব! এর উপর আবার আমার আগের জন বের হবার মনেহয় আধ ঘণ্টা পরও আমাকে আর ডাকছে না। বিরক্ত হয়ে গার্ডকে বললাম, কটা বাজে?
– ১২.১৫
– স্যার কি ভুলে গেছেন যে আরেকজন আছে?

তারপর গার্ড ৬ নাম্বার কাউন্টারের ভিতরে গিয়ে চোখের পলকেই আবার বের হয়ে এসে বললেন, ভেতরে যান।
আমি দাঁড়ানোই ছিলাম। দৌড়ে ভিতরে গিয়ে সব উদ্ধার করে বের হয়ে এলাম।

যাইহোক, ভাইভার দিন অতিরিক্ত অপেক্ষা করিয়েছিল আমাকে। সেই কষ্ট লাঘবেই হয়তো তুলনামূলক তাড়াতাড়ি ভিসা দিয়ে দিল। সত্যি বলতে পাসপোর্ট আনার মেইল দেখে খানিকটা অবাকই হয়েছিলাম।

আমার প্রোফাইল:
BSc in Agriculture, Noakhali Science & Technology University
CGPA: 3.69
HSC: 4. 20
IELTS: 7

আমি যাচ্ছি মাস্টার্সের জন্য।
Sustainable International Agriculture(SIA)
University of Gottingen
Session: Winter 2019/20

সময়সূচী:
Application: December 24, 2018
Deadline: January 31, 2019
Offer Letter: April 17, 2019
Interview: July 01, 2019
E-mail: July 14, 2019
Collection: July 15, 2019

আমি মোট ৪টা বিষয়ে আবেদন করেছিলাম। তার মধ্যে ৩টা থেকে অফার লেটার পেয়েছি। আর একটা (Plant Sciences, University of Bonn) থেকে এখনো কিছু জানায়নি।

পরামর্শ:

১. আপনার ভিসা ফর্মে হোটেলের ঠিকানা না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা দিন। ডর্মে সিট পেতে হবে না। শুধু আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে এমন একটা মেইল নিয়ে যাবেন। Booking.com থেকে হোটেলও বুক করুন; কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু ভিসা ফর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা দিন। এটা দ্রুত ভিসা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।
যেমন: আমার ক্ষেত্রে আমি লিখেছিলাম Studentenwerk Gottingen

২. ভাইভার দিন আপনার সাথে কেউ না থাকলে বড় ব্যাগ নিবেন না। ট্রান্সপারেন্ট ফাইলে কাগজপত্র নিয়ে যাবেন। একজনকে অ্যাম্বাসির গেটে ব্যাগ রেখে ভিতরে ঢুকতে দেখিছিলাম।

আমার ফোন, পেনড্রাইভ ওদের লকারে রেখে টোকেন নিয়ে গিয়েছিলাম। সুতরাং, এগুলো সাথে নিতে পারেন।

৩. ছবি লাগানোর ক্ষেত্রে জেমস ক্লিপ ব্যবহার করুন।

৪. ভাইভায় ফরমাল ড্রেস পরে যাবেন। আর ভিসা অফিসারের সামনে হাসিখুশি থাকবেন। (ভেটকি মাছ স্টাইল না।) আত্মবিশ্বাসী থাকুন। (মাত্রাতিরিক্ত না।)

প্ল্যানের টিকেট কাটতে হবে। শপিং করতে হবে। অনেক কাজ বাকি। গেলাম। আর যারা সামনের দিকে যাচ্ছেন তাদের জন্য শুভকামনা।

পুনশ্চ : আর কোনো প্রশ্ন থাকলে সেটা কমেন্ট বক্সেই করুন, ইনবক্সে না। আর অনুগ্রহপূর্বক হয় বাংলা নয় ইংলিশ লিখুন। বাংলিশ না।

mm

By টিম জার্মান প্রবাসে

আমি জার্মান প্রবাসে! আপনাদের সাথে ছিলাম, আছি, থাকব! :)

One thought on “মাত্র ১৪ দিন পর পেলাম জার্মান ভিসা, উইন্টার ২০১৯”
  1. ভাইয়া আসসালামুআলাইকুম। আমি national university এর honours 2nd year এর একজন ছাত্র। department of statistics, Rajshahi college. National university থেকে পড়াশোনা করে কি আমি masters এ germany তে scholarship আশা করতে পারি। আর যদি তা সম্ভব হয় সেই বিষয়ে কিছু information আশা করছি। (ধন্যবাদ)

Leave a Reply to sohan Cancel reply