আস্সালামুআলাইকুম ভাই সকল ও মা বোনেরা।

কিভাবে সৌদি এয়ারলাইনসের ট্রানজিট দিয়ে ওমরাহ করা যায় তা সম্পর্কে একটু বয়ান দিবো।

 

ট্রানসিট ভিসা :

 

প্রথমে আপনাকে কষ্টের টাকা দিয়া একটা সৌদি এয়ারলাইনসের টিকেট ক্রয় করিতে হবে। অবশ্যই তিন মাসের বেশি মেয়াদ হওয়া যাবে না  এবং ৭২ ঘন্টার বেশিও ট্রানজিট হওয়া চলবে না। তাহলে ট্রানজিট ভিসা পাবেন না।  কিভাবে ভিসা নিবেন, কোথা থেকে নিবেন বিস্তারিত নিচের লিংকে পাবেন :

https://www.vfstasheel.com/landing.html#/documentrequired

 

ভিসা পরবর্তী করণীয় :

লাগেজ ২*২৩ = ৪৬ কেজি  ঠাইসা ভরে ফেলবেন এবং একটা এহরামের কাপড় কিনে ফেলবেন।  যারা ডাইরেক্ট মদিনা চলে যাবেন তারা ঐখান থেকে কিনতে পারেন আর যারা যাবেন না তারা জার্মানি থেকে কিনে নিবেন। কিভাবে ওমরাহ করতে হয় তা ভালোভাবে শিখে নিবেন।  হজরত  মাওলানা  ইউ টিউব আপনাকে অনেক হেল্প করবে এবেপারে।  আমি একটা নির্ভরযোগ্য ও সহীহ মাওলানার বয়ানের লিংক দিয়ে দিলাম , দেখে নিতে পারেন :

https://www.youtube.com/watch?v=MHtVbhH2uwk

 

এহরাম কিভাবে পড়তে হয় তাও একটু দেখে নিবেন।

 

https://www.youtube.com/watch?v=_1LjaAWbMzs

 

ভ্রমন :

 

সবকিছু ঠিক থাকলে টাইম মতো এয়ারপোর্ট চলে যাবেন এবং সবরকমের ফর্মালিটি শেষ করে বিমানে উঠে যাবেন।  এখন আসা যাক একটি ইম্পরট্যান্ট বিষয়ে বলার। এহরাম কখন পড়বেন।  মীকাত ক্রস করার আগে আপনাকে এহরাম পড়তে হবে , এবং তা যদি না করেন তাহলে সব বৃথা , কারণ এহরাম মীকাতের আগে না পড়লে ওমরাহ হবে না।  দুইটা কাজ করতে পারেন ১. এহরাম পড়ে ঘর থেকে বের হবেন I ২. প্লেন এ যখন পাইলট বলবে তখন পড়ে নিতে পারেন।

 

 

সৌদি ইমিগ্রেশন :

 

জেদ্দা নামার পর ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করবেন।  দুনিয়ার সব থেকে বাজে এবং মূর্খ  লোকজন আপনার পাসপোর্ট আর টিকেট নিয়ে সার্কাস করবে। বলে রাখা ভালো আপনি ট্রানজিট ভিসা দিয়ে লিগেল ভাবেই ওমরাহ করতে পারবেন।  সৌদি ট্রানজিট ভিসা এজন্য এবাভেই ডিজাইন করা যাতে ট্রানজিট নিয়ে মুসলিম লোকজন ওমরাহ করতে পারে।  আমি ব্যাক্তিগত ভাবে সৌদি কন্সুলেটে কথা বলে সকল নিয়ম কানুন জেনে ওমরাহ করতে আগ্রহী হয়েছিলাম।  এখন কেউ যদি নাজেনে বলে যে যাবে না সেটা তার পার্সোনাল ওপিনিয়ন। আল্লাহর অশেষ রহমতে গত বছর এবং এবছর ট্রানজিট ভিসা দিয়েই ওমরাহ করে এসেছি। সো আমার অভিজ্ঞতটা আমি মনে করি সবকিছুর উর্দ্ধে।  পেচাল বাদ দিয়ে সামনে এগিয়ে যাই।  সৌদি ইমিগ্রেশন কাউন্টার যারা বসবে তারাও আসলে আসল নিয়ম জানে না , কারণ ওখানে সবাই বাচ্চা , কচি কোকা বসায় রাখছে।  ট্রানজিট ভিসা হাতে নিয়ে এহরাম পড়া অবস্থায় আপনাকে দেখলে মনে হবে যেন আজরাইল দেখছে।  সো ধর্য্য নিয়ে নম্র ভাষায় ওদের বুঝাতে হবে , অব্যশই  আরবি , ওরা ইংলিশ আর ডয়েচ বুঝে না।  সহজ বাংলায় বলবেন ট্রানসিট ভিসা আছে , ওমরাহ করে দেশে চলে যাবেন।  অনেক অফিসার আবার জিজ্ঞাসা করবে যে মদিনা যাবেন কিনা ,??? আপনার ভিসা আছে আপনি সৌদির যেকোনো শহরে যেতে পারবেন এটাই নরমাল বাট ওরা বুঝে না। ..লুল। … অফিসাররা বলবে মক্কা যেতে পারবেন মদিনা পারবেন না।  লুল। …এমন ভাব ওরা মনে হয় আপনার পিছনে ক্যামেরা লাগায় রাখসে । … সো জাস্ট বলবেন মক্কা যাবেন তারপর দেশে যাবেন। 

 

ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করে ম্যাক্সিমাম ১০০ ইউরো কনভার্ট করে নিবেন।  এয়ারপোর্টে রেট কম , তাই বেশি না করাই ভালো।  মক্কা তে অনেক মানি চ্যাঞ্জের পাবেন তারা ভালো রেট দিবে।

 

মক্কা কিভাবে যাবেন :

 

জেদ্দা এয়ারপোর্ট থেকে ট্যাক্সি করে যাবেন , কোনোভাবেই কারো সাথে শেয়ার যাবেন না।  ম্যাক্সিমাম দেড় ঘন্টা সময় লাগবে এবং ভাড়া পরবে ম্যাক্সিমাম ১৫০-১৮০ সৌদি রিয়াল।  আপনি বিলগেটস এর মেয়ের জামাই হইলে ২০০ রিয়াল দিলে তাও কম হয়।

 

হোটেল :

 

মক্কা এর আশেপাশে অনেক হোটেল পাবেন , দাম আর পছন্দ  মিলে গেলে উঠে পড়বেন।  এবেপারে আগে থেকে গুগল এন্ড বুকিং ডট কমে স্টাডি করে যাবেন।  হোটেলে উঠারপর ফ্রেশ হয়ে কাবা ঘর তাওয়াফ এন্ড ওমরাহ করতে চলে যাবেন।  আর যদি মনে করেন ওমরাহ পরে করবেন , মদিনা চলে যেতে পারেন।  মক্কা থেকে মদিনা যেতে ম্যাক্সিমাম সাড়ে চার ঘন্টা সময় লাগবে বাই ট্যাক্সি , বাসেও যেতে পারবেন।  বাসে জনপ্রতি ৫০-৭০ রিয়াল এবং ট্যাক্সিতে ৪০০-৫০০ রিয়াল পরবে।  মক্কা থেকে মদিনা আপনি শেয়ার যেতে পারেন , ওখানে কোনো সমস্যা হবে না।

 

ফিনিশিং :

 

বলে রাখা ভালো জেদ্দাতে  এয়ারপোর্ট তিনটা।  সো কোন এয়ারপোর্ট থেকে যাচ্ছেন আবার কোনটায় ফিরবেন তা ট্যাক্সি ড্রাইভারকে ভালোভাবে বুঝায় দিতে হবে।  যত যাই কিসুই হোক অনলি মনে রাখবেন , সাউথ টার্মিনাল থেকে যাচ্ছেন আবার সাউথ টার্মিনালেই আসতে হবে ( কিং আব্দুল আজিজ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ) এবং সৌদি এয়ারলাইন। শুধু   সৌদি এয়ারলাইন সাউথ টার্মিনাল থেকে অপারেট করে , অন্যানোদের জন্য আলাদা এয়ারপোর্ট আছে।

দেশে ফিরার সময় এয়ারপোর্ট থেকে জমজমের পানি নিতে ভুলবেন না।  রিয়েল দিয়ে লিটার এর একটা বোতল কিনে নিবেন।  জমজমের পানির কোনো ওজন হবে না , একজন একটা বোতল কিনতে পারবেন।

 

হাদিয়া

 

টিকেট = যত সস্তায় কিনতে পারেন

ভিসা ফী = ১৩৫ ইউরো থেকে ১৮৫ ইউরো উইথ ট্রাভেল ইন্সুরেন্স

এয়ারপোর্ট – মক্কা = ১৫০-১৮০ রিয়াল বাই ট্যাক্সি

হোটেল = দুই দিন ম্যাক্সিমাম ২০০-৩০০ রিয়াল

মক্কা -মদিনা -মক্কা =  ট্যাক্সি (শেয়ার ) = ১৫০-১৮০ & বাস = ১০০-১২০ রিয়াল

ট্যাক্সি  = ৮০০-১০০০ রিয়াল

খাওয়া -দাওয়া = যত খাইতে পারেন খান।  ম্যাক্সিমাম ২৫০ রিয়াল ( ২ দিন )

মক্কা – এয়ারপোর্ট = ১৫০-১৮০ রিয়াল বাই ট্যাক্সি (সিঙ্গেল)

 

ডিসক্লেইমার

 

এতক্ষন যা বয়ান দিলাম তা নিতান্তই আমার ব্যাক্তিগত মতামত।  অন্য কারো সঙ্গে না মিলাটাই স্বাভাবিক।  বানান ভুলের জন্য এবং বাংলিশের জন্য ক্ষমাপ্রাথী।  নিউ রুলস এন্ড রেগুলেশন এর কারণে আমার সাথে কিছু অমিল পেলে দায় দায়িত্ব আমার না। যেকোনো ধরণের মতামত , সংযোজন , সংশোধন গ্রহণযোগ্য।  আপনারা যারা মনে করবেন উপকৃত হয়েছেন তারা আমার জন্য দুআ করতে ভুলবেন না।

One thought on “ওমরাহ ইন ট্রানজিট”

Leave a Reply to Arif Cancel reply