আমি জার্মানির জন্য ট্রাই শুরু করি ২০১৬ এর উইন্টার সেশন থেকে। মোটামুটি ১০-১২ টা ইউনিভার্সিটি তে ট্রাই করে সাফল্যের সাথে বিফল হই। সবগুলোতে কারণ ছিল একটাই : আমার অতি অল্প সিজিপিএ। আমার মাস্টার্স , সিসিএনএ সার্টিফিকেট, জব এক্সপেরিয়েন্স সবই ফাউল এই একটা জিনিসের কাছে। যাইহোক , হাল ছাড়ি নাই, লেগে ছিলাম। অবশেষে আল্লাহর রহমতে ২০১৭ এর উইন্টার সেশনে গিয়ে শিকে ছিঁড়লো। আমি চান্স পেলাম HS Anhalt , M.Sc in Photovoltaic Engineering Science এ ।

আমি ব্লক একাউন্ট এর কাজ শুরু করি ১৫ মে ,২০১৭ তে। কনফার্মেশন পাই ২২ মে। তারপর টাকা ট্রান্সফার করে এগেইন কনফার্মেশন পেতে পেতে জুন ১। আমার ভিসা ইন্টারভিউ ছিল ২০ জুন। তার আগেই পুরা জার্মান প্রবাসে ব্লগ গুলে খেয়ে ফেলসি।মিথ্যা বললে ভুল হবে যে ভয় পাই নাই অথবা টেনশন করি নাই।

আমার ভিসা ইন্টারভিউ ছিল ২০ জুন, ৯.৩০ মিনিটে। কপাল ভালো ছিল কিনা জানি না কিন্তু ঐদিন একাই স্টুডেন্ট ছিলাম। যাই হোক , ঠিক ৯.২০ মিনিটে আমাকে ভিতরে যাওয়ার জন্য বললো। আমার কাউন্টার ছিল ৬। যাওয়ার পর আমার পেপারসগুলো নিয়ে বসতে বললো। ঠিক ১০.১০ মিনিটে আমাকে আবার কাউন্টারে কল করে।

ভি.অ : গুড মর্নিং, নাম?
আমি: তানজিয়া আফরিন
ভি.অ : আপনি বি.এস.সি করছেন আবার মাস্টার্স ও করেছেন ?
আমি: জী
ভি.অ : বি.এস.সি কোন ভার্সিটি থেকে করেছেন?
আমি: AUST
ভি.অ : কোন সাবজেক্ট?
আমি: EEE
ভি.অ : প্রথম মাস্টার্স কেন করেছিলেন?
আমি: হাবি জাবি অনেক কিছু বলসি। আমার পুরা ইন্টারভিউ এর সবচেয়ে বেশি টাইম নিসি এইটার উত্তর দিতে।  কারণ আমার প্রথম মাস্টার্স CSE তে আর আমি চান্স পেয়েছি Energy রিলেটেড সাবজেক্টে।
ভি.অ : কোন সাবজেক্ট এবং কোন ভার্সিটিতে যাচ্ছেন?
আমি: HS Anhalt , Photovoltaic Engineering Science
ভি.অ : এইটা সিলেক্ট করার কারণ কি?
আমি:মাত্র শুরু করসিলাম হাফ ও বলতে পারি নাই, থামায় দিসে।
ভি.অ : সাবজেক্টটা আসলে কিসের উপর?
আমি: Solar Energy
ভি.অ : কত সেমিস্টার ? কত ক্রেডিট?
আমি:৩ সেমিস্টার, ৯০ ক্রেডিট
ভি.অ : জার্মানিতে আপনার হাসব্যান্ড কি থাকে?কি করে? ঠিকানা কি?
আমি:যা যা জানতাম বললাম।

হুম্ম , এই নিন পে-স্লিপ। ব্যাংকে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে স্লিপটা রেখে দিবেন, কল দিলে স্লিপ সাথে করে নিয়ে আসবেন। এই বলে উনি আমার সব অরিজিনাল সার্টিফিকেটগুলো ফেরৎ দেয় কিন্তু পাসপোর্টটা রেখে দেয়। আমি ভাবলাম যাক, সব ভালোয় ভালোয় শেষ হলো কিন্তু না, আমার কপালে এত আরাম নাই।

পরদিন সকালবেলা এম্বেসী থেকে ফোন আসে যে তারা ভুলে আমার পাসপোর্ট রেখে দিয়েছে, আমি যেন বেলা ২ টায় গিয়ে নিয়ে আসি। ইস্স , রোজা রেখে ক্যাটক্যাটা রোদে আবার দৌড় দিলাম। ঠিক ২ টায় ভেতরে ঢুকে পাসপোর্টটা নিলাম, ব্যাটা এত কষ্ট দিলো কিন্তু একটা সরি ও বললো না,কিপ্টা।

যাক, এই ছিলো আমার ভিসা ইন্টারভিউয়ের সফর , দোয়া করবেন যেন ভালোয় ভালোয় ভিসাটা পাই।

আর একটা কথা, কখনো আশা হারাবেন না, ট্রাই করা অফ করবেন না।  দিন শেষে জয় সাহসীদের হয় , ভীতুদের না।


আরো পড়তে পারেনঃ

2 thoughts on “লো সিজিপিএ ? হাল ছেড়োনা বন্ধু! – ভিসা সাক্ষাৎকার, ২০ জুন ২০১৭”
  1. আপি আপনার লেখা টা পড়ে ভাল লাগল, আমারও বি.এস.সি সিজিপিএ কম (২.৬৬), এখন বুঝতেছিনা এই সিজিপিএ দিয়ে আ্যপ্লাই করব কিনা।
    আপি আপনার সিজিপিএ কত ছিল?
    আশা করি আপনার মতামত জানাবেন।
    দোয়া করি আপনার ভিসা যেন হয়ে যায়। ☺☺☺☺

  2. Assalamu Alaikum Apu.
    I am also a student from dept. Of EEE( 2nd year, 2nd semester) , Ahsanullah university of science and technology (AUST).
    I have also dream to go Germany for Masters. And my interest is in the communication releted subject.
    Wish you a very good luck for getting Visa.

Leave a Reply to Mehedi Hasan Cancel reply