জার্মানিতে আসার আগে আমার খুব কাছের বড় ভাই আমাকে বলেছিল জার্মানিতে যদি আস তা হলে দেখবা এখানকার বাঙ্গালিরা একজন আর একজনকে বাঁশ দেয়। আমি কথাটা বিশ্বাস করিনি। কিন্তু জার্মানিতে আসার পরপরেই বুঝতে পেরেছি ঘটনা সত্য! দেশ হতে ভিসা ওয়ার্ল্ড দারা বড়সড় বাঁশ খেয়ে এসেছি মাত্র। পকেটে বাপের জমি বিক্রি করা ১০০০ইউরো। আমি যেখানে উঠেছি সেখানে আরও তিন বাঙ্গালির বসবাস। অতীতে আরও অনেকে ছিল। শুনেছি প্রায় ৫০ জন বাংলাদেশী স্টুডেন্ট এখানে এসেছিল। ওয়ার্ক পার্মিশন না থাকায় সবাই চলে গেছে বিভিন্ন শহরে। আসার পর সবার সাথে পরিচয় আলাপচারিতা হল। সবাই কে ভাল লাগলো। বিভিন্ন জন বিভিন্ন তথ্য দিয়ে আমাকে সাহায্য করল। ভিসা বাড়ানোর ব্যাপারটা বুঝলাম, কিভাবে কি করতে হবে।

দুই দিনের ভিতরে জানতে পারলাম একজন ভিসা বাড়াবে অন্য এক সিটি থেকে। ব্যাংকে সেভিংস দেখাতে হবে কমপক্ষে ৫০০০ইউরো. বলে রাখি যে ছেলেটা ভিসা বাড়াবে সে ব্যাচেলর করতে আসছে। দেশে থাকতে সে ডেস্টিনি করত। আর জার্মান আসার সময় পরিবারের কাছ থেকে ৮০০০ইউরো নিয়ে আসছে। ৮০০০ ইউরো খরচ করতে তার ৩ মাস লেগেছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য সে এই টাকা দিয়া অনলাইনে জুয়া. খেলেছে. যাই হুক তার টাকা কি করছে এ বেপারে আমার কোন মাথাব্যথা ছিলনা। তার কাছে তখন ভিসা বাড়ানোর জন্য জন্য টাকা নাই। সে টাকা যোগার করার চেষ্টা করছে। নিজ দায়িত্বে আমার কাছে থাকা ৫০০ ইউরো তাকে দিলাম। আমার সাথে আরও দুই জন ছিল একজনের কাছ থেকে ১০০০ আর এক জনের কাছ থেকে ৬০০ নিল। অন্য এক শহরে থাকে তার কাছ থেকে নিল ২০০০ ইউরো। আশেপাশের কাছ থেকে আরও নিল ১০০০।

মোটামুটি একটা টাকা নিয়ে সে বাসা থেকে বের হয়েছে ভিসা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে! তার সাথে সাক্ষাৎ হবে যেদিন যে দিন ছিল সে দিন থেকে সে আর ফোন ধরছে না। সবার মনে সংশয় সে কি টাকা নিয়া পালাল?যে ছেলে উচ্চশিক্ষার জন্য জার্মানিতে এসেছে সে এই কাজ করতে পারেনা। আমার টাকার পরিমাণ অল্প থাকলেও চরম টেনশনে ছিলাম। নিজের সবটুকু যে আমি তাকে দিয়ে দিয়েছি। অনেক কষ্টে তার সাথে যোগাযোগ করলাম। সে বলল ভিসা অফিসার তার টাকা ব্লক করেছে. আমাদের টাকা সে আস্তে আস্তে দিয়ে দিবে। নিজের কাছে টাকা নাই। জার্মানিতে কারও কাছ থেকে ধার নিব সে উপায়ও নাই। গ্রামের বাড়িতে টাকা চাইব সে অবস্থাও নাই। খেয়ে না খেয়ে ২ মাস অতিবাহিত করেছি।

ছেলেটি আমার ফেসবুকে ছিল। মাঝে মাঝে নক করতাম। রিপ্লাই দিত, অনেক সময় দিত না। এক সময় দেখলাম ফেসবুকে আমাকে ব্লক করে দিয়েছে এবং বাকি পাওনাদারদেরও। সবাই যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে। সবাই কে সবাইকে সে বলেছে কিস্তিতে টাকা দিবে। গত ৫মাসে আমাকে সে দিয়েছে ২৩০ ইউরো. ফেসবুকে আমি ব্লক মোবাইল নাম্বার বন্ধ। যোগাযোগ নাই কোন। ২৭০ ইউরো না দিলে আমি শেষ হয়ে যাবনা। কিছু দিন কস্ট করেছি এই আর কি। সব চাইতে কষ্ট লাগে যখন তার কথার কোন মিল খোজে না পাই। সে কখনো বলে বার্লিন কখনো স্টুটগার্ট। কখনো লাইপছিগ। তার টাকা আদও ব্লক করা হয়েছিল কিনা জানি না.অণয় একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস পড়ে বুঝলাম জার্মানিতে বসবাসরত অনেকের চেয়ে সে অনেক ভাল আছে।

সে এ গ্রুপের সদস্য. আমি চাইলে তার নাম ছবি টাকা ফিরত দেয়ার লিখিত ডকুমেন্ট দিতে পারতাম। যারা টাকা পাই সবাই মিলে পুলিশের কাছে যেতে পারতাম এখনো যাইনি। আমি তাকে ২ আগস্ট পর্যন্ত সময় দিয়েছি। এর পর টাকার মায়া ত্যাগ করে একটা কিছু করতে হবে। বলা বাহুল্য আমি ২৭০ইউরো পেলেও অন্যরা ৫০০+৮০০+১৪০০+৩০০+৪০০ ইউরো পাবে।

সে এই গ্রুপের সদস্য! আমার লেখা সে পড়তে পারবে কিনা জানি না। কারণ আমাকে সে ব্লক করে রেখেছে।

এটাই আমার উপকারের সার্থকতা!

তুমি যে পাত্রে ভাত খাও, সেই পাত্রে “…” কইরো না! (Must Read!)

Agency: এজেন্সি/দালাল – মেহেদি হাসানের প্রতারণার ফাঁদ থেকে সাবধান – পর্ব – ২(Audio Clips)

Agency: এজেন্সি/দালাল – মেহেদি হাসানের প্রতারণার ফাঁদ থেকে সাবধান – পর্ব – ১

mm

By Shazzadur Rahman

Name: Md Shazzadur Rahman Address: Essen, Germany Past Education: East West University, Dhaka, Bangladesh. Sub: Pharmacy Batch: 2006-2-70 Home town: Kishoreganj

4 thoughts on “উপকারের স্বার্থকতা (সাজ্জাদ সাজু – এসেন,জার্মানি)”
  1. ভাই ঐ ভদ্রলোকের ছবিটা দিলে ভালো হত, তাহলে ভবিষ্যতে তার প্রতারণার ফাদে কেউ পড়তো না।

    1. এই দুই লিঙ্কে পাবেন…একই ব্যক্তি
      Agency: এজেন্সি/দালাল – মেহেদি হাসানের প্রতারণার ফাঁদ থেকে সাবধান – পর্ব – ২(Audio Clips)

      Agency: এজেন্সি/দালাল – মেহেদি হাসানের প্রতারণার ফাঁদ থেকে সাবধান – পর্ব – ১

Leave a Reply