গপ্ল – ১

যেখানে দাতা-গ্রহীতা দু’পক্ষই লাভবান, সেখানে অপরাধী ধরা কঠিন। অভিযোগকারী পাওয়া যায় না। অতিরিক্ত মালের নির্ধারিত ওয়েট চার্জ ফাঁকি দিয়ে একটা চক্র কম খরচে মাল বুকিং এর কন্ট্রাক্ট করে থাকে। অনেক দিন ধরে ধরার চেষ্টা করছিলাম। ওনাকে ধরতে পারলেও সাথের দু’জন পালিয়েছে। যাত্রি ধরে দিয়েছে। কারণ দুর্ভাগ্যবশতঃ যাত্রিও ক্ষতিগ্রস্ত।

যাত্রি মালামাল নিয়ে ঢোকার পরই এরা পিছু নেয়। প্রলোভন দেখায়। কন্ট্রাক্ট হয়। কিন্তু আজ ব্যাটে-বলে হয়নি। এয়ারলাইন্সের পক্ষে জড়িত অফিসার কাউন্টারে নেই। অপেক্ষা করতে করতে কাউন্টার বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রী ফ্লাইট মিস করে চাচা মিয়ারে ধরিয়ে দেন।

আপাতঃ দৃষ্টিতে এরূপ অসদুপায়ের ক্ষেত্রে যাত্রিগণ নিজেদের লাভবান মনে করলেও বাস্তবিক পক্ষে কী হচ্ছে? গন্তব্যে পৌঁছার পর প্রায় ক্ষেত্রে যাত্রিকে ওভার-ওয়েট চার্জ পরিশোধ করে মাল ছাড়াতে হচ্ছে। অর্থাৎ একবারের জায়গায় দু’বার, লাভের গুড় পিঁপড়ার।

দয়াকরে এদের এড়িয়ে চলুন।

গল্প – ২

হংকং এর মিস সান্দ্রা। মাল্টিন্যাশানাল কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। বাংলাদেশের প্রতি তাঁর বিশেষ কৌতুল এবং ইনভেস্টমেন্ট আকাঙ্খায় এসেছিলেন। ভ্রমণশেষে যাচ্ছিলেম ফুরফুরে মেজাজে। হয়তো আনমনে চিং চ্যাং ভাষায় গাচ্ছিলেন, এমন দেশটি কেন খুঁজে পাইনি আগে..

হঠাৎ পাশের হেল্প ডেস্কের হাঁক, পাসপোর্ট প্লিজ। পাসপোর্ট দেখে..ডিপার্চার কার্ড প্লিজ। ফিল আপ করে দেই? ভদ্রমহিলা সহাস্যে.. কার্ড আমিই পূরণ করে এনেছি, আপনাদের কষ্ট দেবনা। “কষ্ট না দেন, টিপস তো দেবেন!!” অপ্রস্তুত সান্দ্রা খুঁজে টুজে এক ডলার টিপস অফার করাতেই বিপত্তি!!

বাংলা বুঝলে হয়তো তিনি বমি করে ফেলতেন, ফইন্নির পোলা ভাইবা খয়রাত দিচ্ছেন? গালি খেয়েও ভাষার কারিশিমায় উনি তখনও হাসছিলেন। হঠাৎ তার হাসি রূপ নিল ভীতিতে। হেল্প ডেস্কের ভলান্টিয়ারদের কটমট চোখ রাঙানি দেখে ২০ ডলার দিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে কেটে পড়েন।

এদেশ থেকে নিয়ে যাওয়া সব সুখস্মৃতি বিস্মৃত হয়ে অত্যন্ত নেগেটিভ এটিচিউডে ঘটনা জানিয়ে মেইল করেন তার লোকাল রিপ্রেজেনট্যাটিভ মিঃ মইন-কে। মইন ইনবক্সে বিষয়টি আক্ষেপের সাথে তুলে ধরেন আমাদের কাছে।

প্রাইমারি ইনভেস্টিগেশন শেষে সম্ভাব্য তিনজনের ফটো পাঠেলে, অল আর আইডেন্টিফাইড এন্ড পানিশড একোর্ডিংলি।

আফসোস, এই কুলাঙ্গাররা দেশকে, দেশের মানকে কোথায় নামিয়ে দিচ্ছে???

এভাবে চলতে থাকলে, ২০১৬ সালের মধ্যে ১০ মিলিয়ন/লক্ষ পর্যটক আকৃষ্ট করার সরকারি প্রকল্প প্রকারান্তারে অপকল্প মাত্র।

লেটস ফাইট…

গল্প – ৩

‘লস্ট এন্ড ফাউন্ড’ মানে কী?
ওয়ান্স লস্ট, নেভার ফাউন্ড?

লাগেজ কাটাকুটি, ভেতরের মুল্যবান সামগ্রী হাতানি… আমাদের লস্ট এন্ড ফাউন্ডে দীর্ঘদিনের হয়রানি।

বাংলাদেশ বিমানের সিকিউরিটি সুপারভাইজার লস্ট এন্ড ফাউন্ডের রক্ষক হয়ে ভক্ষণ করতে গিয়ে হাতে নাতে ধৃত। অতঃপর পেনাল্টি। ফৌজদারী মামলায় পেনাল্টি খেয়ে ইতিমধ্যে চাকরি হতে বরখাস্ত।

গল্প – ৪

এটা সবারই জানা কথা যে, ঢাকা এয়ারপোর্টে ৩-৪ ঘন্টা অপেক্ষা না করে লাগেজ পাওয়া যেত না। কোলকাতা হতে ৩০ মিনিটে ফ্লাই করে এসে লাগেজ পেতেন ৩০০ মিনিট পর।

কিন্তু যাঁরা গত কয়েক সপ্তাহে ভিজিট করেছেন, বলতে পারবেন কয় মিনিট পর লাগেজ পেয়েছেন? সর্বোচ্চ ২০-৩০ মিনিট। হাউ কাম?

জাস্ট এ প্ল্যান। অভিনব টেকনিক। যা সম্ভব করেছেন আমাদের আরেক ম্যাজিস্ট্রেট। তাঁর প্রতি সকল প্রবাসী ও ভিজিটরদের পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা। হোয়ার দেয়ার ইজ এ উইল দেয়ার ইজ এ ওয়ে, হি প্রুভড ইট! (y)

গল্প – ৫

উনি এত খুশি কেন? বেশি খুশিতে যা হয়! মেলাদিন পর বিদেশ থেকে এসেছেন। হুলুস্থুল করে গাড়িভাড়া করে বাসায় গিয়ে দেখেন মুল ব্যাগটিই গাড়িতে তুলতে ভুলে গেছেন! ওনার ধারণা, ব্যাগ মালিক হারিয়ে বসে বসে ওনার জন্য কাঁদছে আর খুঁজছে! 🙂

লেগে গেলেন এপিবিএন এর কিছু উদ্যোমী কর্মকর্তা। বাহির এলাকার সিসি ফুটেজ এনালাইসিস। আমন্ত্রণ পেয়ে নিজে গিয়েও শরিক হলাম। ৫/৬ ঘন্টা চেষ্টা করে হাল ছেড়ে চলে গেলাম। হাল ছাড়েনি এপিবিএন। প্রায় ১২ ঘন্টা গবেষণা করে ব্যাগ সহ চোর নিয়ে হাজির!

ভদ্রলোক ব্যাগ পেয়ে খুশি। মুল্যবান সব জিনিষ ঠিকঠাক। হাসিখুশি চলে গেলেন, রেখে গেলেন স্মৃতি… দুই চোর!!

ছোট বড় অনেকেই এই পেইজ ফলো করেন.. বেশির ভাগই ভালো কিছুর আশায়। কিন্তু কেউ কেউ আছেন, শবেবরাতের রাতেও দোয়া করেছেন, আল্লাহ গজব নাজিল করো এই পেইজটায়! -_-

আমরা কি করলাম না করলাম তা এই পেইজের সার্থকতা নয়। এই পেইজের সবচেয়ে বড় সার্থকতা, বলতে দেয়া.. বলার ক্ষেত্র দেয়া। আমাদের বলার লিমিটেশন থাকতে পারে, আপনাদের কিন্তু নেই।

প্রশ্ন আসতে পারে, বলাতেই কি কাজ হয়? হম.. হয় এবং হচ্ছে। কেউ কেউ সদিচ্ছা নিয়ে তার প্রতিকারমুলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন। কেউ অনিচ্ছা সত্ত্বেও চক্ষু লজ্জায় নিচ্ছেন। আর যারা কাঁকের মত চোখ বন্ধ করে এখনও অকাম করে যাচ্ছেন, তাদের উপরের লোকজন কিন্তু ঠিকই দেখছেন..

সুতরাং কাজ হচ্ছে এবং হবে। আজ না হোক কাল, কাল না হোক পরশু। কারণ আপনাদের কমেন্টস, গ্রীভেন্স, অভিযোগ, ক্ষোভ অনেক উপরে আঘাত হানছে। তথ্যপ্রযুক্তির এ অবাধ প্রবাহে কাঁক হওয়ার সুযোগ নেই.. বাকস্বাধীনতা আপনার সাংবিধানিক হাতিয়ার.. থেমে কেন?? 🙂

ধন্যবাদান্তে, Magistrates, All Airports of Bangladesh

By Magistrates, All Airports of Bangladesh

We dare to chase, whoever the big shot, care very less. Let us know how you gonna be exploited. Extend your hands and kick the criminals out. Facebook Page: https://www.facebook.com/magistrates.all.airports.bangladesh

19 thoughts on “বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ! বদলাচ্ছে বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট!”

Leave a Reply