আফ্রিকান>>>>

আমার দেখা সবচেয়ে হইচইকারী জাতি হচ্ছে আফ্রিকান। এরা সেটাই করে যেটা তাদের মনে চায়। লজ্জা শরমের বালাই নাই। এক জায়গায় দুই এর অধিক আফ্রিকান থাকলে আপনি তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে টের পাবেনই, তারা নিজ থেকেই তাদের উপস্থিতি টের পাইয়ে ছাড়বে। কোন পার্টির সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটাকে পটানোর জন্য যদি কেউ সাহসী হয়, তবে সে নিশ্চিতভাবে একজন আফ্রিকান। ফ্রেঞ্চ এক্সেন্টে কি যে বলে আমায় মাথায় ঢোকে না, কিন্তু সুন্দরীরা কিভাবে যেন পটে যায়।
তবে এরা অনেক প্রাণোচ্ছল ও বন্ধুবৎসল। কিছুটা উগ্র হলেও ক্যাচাল লাগার সম্ভাবনা কম। ঐক্য কত প্রকার ও কি কি, এদের কাছ থেকে শিখেছি, কিন্তু নোংরা পলিটিক্স করতে দেখি নি। তবে মাঝে মাঝে ওরা অতিরিক্ত করে। কালকে বৃষ্টি ও কাঁদার মধ্যে ফুটবল খেলছি। ১২ জনের মধ্যে ৬ জনই আফ্রিকান। আমি তাদেরকে দুই দলে ভাগ করে দিলাম। ওমা, খেলা শুরুর ২ মিনিট পর থেকেই শুরু হলো হাউকাউ। ফাউল নিয়ে ক্যাচাল, গোল নিয়ে ক্যাচাল। ফলস্বরুপ ২ মিনিট পরপর খেলা ২ মিনিটের জন্য স্থগিত। দুজন জার্মান তাদের কান্ড দেখে উসখুস করছে, কিন্তু স্বভাববশত মুখ ফুটে কিছুই বলছে না। আমি ওদেরকে ডেকে বললাম, “ভাইরে, এত হাউকাউ করস ক্যান! টেক ইট ইজি”। “সরি ম্যান” বলে ওরা আবার খেলা শুরু করল। কিন্তু দুমিনিট পরে যেই লাউ সেই কদু। জার্মান মেয়েটা ফুটবলে কষে একটা লাত্থি দিল। সেটা দেখে নাইজেরিয়ার একজনের তাৎক্ষনিক মন্তব্য, “ওয়াও, তুমিও ফুটবল খেলতে পারো!” বেচারা এর আগে কোন জার্মান মেয়েকে ফুটবল খেলতে দেখেনি। ওর কথা শুনে সবাই হাসিতে ফেটে পড়ল।

যাইহোক, আমার দল একটা পেনাল্টি পেল। বিপক্ষ দলের আফ্রিকানদের প্রাণের দাবি যে, কোন আফ্রিকান সেই পেনাল্টি নিতে পারবে না। তাই আমি পেনাল্টি মারতে গেলাম। কিন্তু কার যেন বদদোয়া লেগেছিল। বলে লাথি দিয়েই কাঁদার মধ্যে ধপাশ করে পড়ে কাপড় চোপড় নষ্ট করলাম। আর ওরা হা হা করে অট্টহেসে সেটা উপভোগ করল। কোমরের ব্যাথাটা এখনও সারেনি। একসময় হাউকাউ সহ্য করতে না পেরে সেই দুই জার্মান মন খারাপ করে খেলা ছেড়ে চলে গেল। তবে ওদের একটা বিষয় খুব ভাল লেগেছে। ওরা নতুন দেশে এসেই সেই দেশের ভাষা ও সংস্কৃতি শেখার চেষ্টা করে ও প্রায় সবাই লেখাপড়ায় খুব ভাল আর ওদের ইংরেজি খুবই ভাল যদিও আমি তাদের উচ্চারণ বুঝি না! তবে জার্মানীতে জন্ম নেওয়া আফ্রিকান বংশোদ্ভূতরা সম্পুর্ণ আলাদা। গায়ের রং ছাড়া কোন কিছুই আফ্রিকানদের সাথে মিলেনা।

ফ্ল্যাটমেট হিসেবে দুজন আফ্রিকানকে পেয়েছিলাম। দুষ্টামি ও বাদরামোর স্বভাবটা ওদের কাছে থেকেই পাওয়া।

mm

By Shariat Rahman

আমি বর্তমানে রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অফ এপ্লায়িড সাইন্সে সায়েন্টিফিক এসিস্ট্যান্ট (Wissenschaftlicher Mitarbeiter) হিসেবে কাজ করছি। ২০০৯ সালে বুয়েট থেকে আইপিইতে ব্যাচেলর আর ২০১২ সালে রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অফ এপ্লায়িড সাইন্স থেকে বায়োনিক্সে মাস্টার্স সম্পন্ন করি। অবসর সময়ে সোস্যাল মিডিয়া, আড্ডাবাজি আর খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করি।

Leave a Reply