জার্মানিতে আমি প্রথম প্রেমে পড়ি এদের, আমার চোখ স্থির হয়ে থাকে যখন গভীর রাতে দেখি পুলিশ গাড়ীগুলো সাঁই সাঁই করে চলে যায়! স্টিয়ারিং এ বসা এই বসগুলো আর পুরুষ সহকর্মীটা পাশে চুপ করে বসা, মেয়েগুলো এমনিতে সুন্দর, তার উপর একগাদা অস্ত্রশস্ত্র থাকে কোমরের চারপাশে ঝুলানো, সেই প্রশস্ত কোমরে হাত রেখে অনেক রাতে সিগন্যালের মোড়ে সঙ্গের ছেলেটির সাথে যখন হেসে হেসে কথা বলতে দেখি আমার দেখতে এত ভাল লাগে, অনুভূতিটাকে আমি শিশিরের মালার মত গলায় জড়িয়ে রাখি!

সন্ধ্যার পরে সজনে ডাটা কিনে ফিরছিলাম, দলা পাকানো টিস্যু থেকে জগাখিচুড়ি মার্কা ১৪টা জিনিস হাতের মধ্যে ছিল, একসময় খেয়াল করি ওয়ালেটটা নেই সাথে, আমার জার্মান পাসপোর্ট থেকে শুরু করে মেনজা কার্ড, ইউনিভার্সিটির আইডি, ব্যাংক কার্ড, হেলথ ইনস্যুরেন্স কার্ড, বেশ কিছু ইউরো সব ওর মধ্যে, পরবর্তী ১ঘন্টায় সেই দোকান, যেসব যায়গা দিয়ে হেঁটে হেঁটে গেছি তার প্রত্যেক কোনায় কোনায় খুঁজে বেড়ালাম! কান্না নয়, কিন্তু টের পাচ্ছি চোখ দিয়ে গরম ধোয়া বেরোচ্ছে! এর কোন একটি কাগজ ছাড়া ১০মিনিটের পথও আগানোর উপায় নেই। তদুপরি পাসপোর্ট উঠাতে গুনতে হবে নগদ ১০০ইউরো!

এ অফিস ও অফিস দৌড়াদৌড়ি তো আছেই, পুলিশ স্টেশনে ঢুকে বললাম আমার এই হয়েছে, মেয়েটি কি যেন লিখতেছিল, চোখ না তুলেই বলল মনিরুজ্জামান! ওমা একি! জিনিস হারানোর একঘণ্টাও হয়নি এর মধ্যেই সেটা পুলিশ স্টেশনে এসে হাজির !! দেশটির প্রতি মুগ্ধতায় মনে মনে সবাইকে জড়িয়ে ধরলাম!

আমাদের অ-সৃজনশীল এবং অবিকশিত পুলিশ ভাইরা কবে যে আমাদের স্বার্থ রক্ষায় সোচ্চার হবেন আল্লায় জানে।

পুনশ্চ:

ওয়ালেট পাওয়া গেছে জেনে এর মধ্যে একটু ধাতস্থ হয়েছি ,ফেরত নেয়ার সময় আমার কি একটা সাইন লাগবে, দিতে গিয়ে শয়তানি করলাম,

-কিসের কি সাইন টাইন নিচ্ছ আমার ব্যাংকের টাকা পয়সা নিয়ে নিবে নাতো।

-আমি এখানেই আছি,যেদিন তোমার ব্যাংকের টাকা কমে যাবে চলে এস।

-চল ছবি তুলি(শুনেই হাসতে হাসতে পাশে চলে এলো)।

তোরা এত ভাল কেন রে! তোদের কেমনে বুঝাই কেউ একটু নরম করে কথা বললেই তার জন্যে আমার মন কাঁদে! সজল চোখ,বাঁকানো ভ্রু,আর কোন ধরনের নখর ছাড়াই কত অসাধারণ মেয়েটি……

mm

By Moniruzzaman Monowar

আমি পড়লেখা করছি Niederrhein University of Applied Sciences তে এবং থাকি Düsseldorf এ।

Leave a Reply