“আমি পাইলাম, ইহাকে পাইলাম।”

ভিসা পাওয়ার পর সবার মনেই কম-বেশী এই অনুভূতির সৃষ্টি হয়। অনেকেই আনন্দে এতই আত্মহারা হয়ে পড়েন যে, ভিসা পাওয়ার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজ সেটার কথা ভূলেই যান।

হ্যা, ভিসা পাওয়ার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে আপনার টিকেট কনফার্ম করে ফেলা। এ জন্য আগে থেকেই খোঁজখবর নিয়ে রাখা বুদ্ধি-( মানের/মতির ) কাজ। তাহলে পরে কষ্ট অনেক কম হয়।

এখন কথা হল, আপনি কিভাবে টিকেটের ব্যাপারে খোঁজখবর নিবেন?

খোঁজখবর নেয়ার জন্য আপনার সামনে অনেক রাস্তাই খুলা আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলঃ

১) নিজে/অভিবাবকের মাধ্যমে ট্রাভেল এজেন্ট এর কাছ থেকে গন্তব্যস্থলের টিকেটের দাম জেনে নেয়া।

২) অনলাইনে টিকেটের দামের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া।

আমি নিজে দুই পন্থাই অবলম্বন করেছিলাম, কিন্তু আজকের লেখায় আমি দ্বিতীয় পন্থা নিয়ে আলোচনা করতে চাই।

অনলাইনে টিকেটের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে সবচেয়ে সহজ কাজ। আপনি এর মাধ্যমে সকল এয়ারলাইন্স এর টিকেটের দাম নিজে নিজে যাচাই করতে পারছেন। আরেকটি বড় সুবিধা হল, অনলাইনে খবর নিলে আপনি অনেক ডিল/অফার পেয়ে যাবেন, যেগুলো থেকে টিকেট কাটলে আপনার অনেক টাকা বেচে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। আর অনেক অনলাইন প্লাটফর্ম থাকে যারা ছাত্রছাত্রীদের জন্য ছাড়ে টিকেট বিক্রি করে। সেরকম একটি প্লাটফর্ম হচ্ছে Student Universe ।  এখানে আপনি একাউন্ট খুলে যদি প্রমাণ করতে পারেন(!) যে আপনি একজন ছাত্র/ছাত্রী তাহলে তারা আপনাকে রেগুলার দামের চেয়ে অনেক কম মূল্যে টিকেট সরবরাহ করতে পারবে।

airport collage

আপনি যে একজন ছাত্র/ছাত্রী তাহাঁ প্রমাণ করার জন্য নিম্নোক্ত জিনিস-পত্রের স্ক্যান কপি তাদের সরবরাহ করলেই হবেঃ

১) আপনার HSC/Bachelor সার্টিফিকেট,

২) আপনার ইউনিভার্সিটি এডমিসন লেটার,

৩) আপনার ভিসুম(!)

এই কাগজপত্র তারা পেয়ে গেলে আপনার একাউন্ট এক্টিভেট করে দিবে। একবার এক্টিভে্ট হয়ে গেলেই কেল্লা-ফতে! আপনি তখন অনেক কম দামেই টিকেট কিনতে পারবেন।

আমি যখন ঢাকা থেকে হাম্বুর্গ আসি তখন আমার টিকেটের দাম পড়েছিল সর্বসাকূল্যে ৩৯৭৫০ টাকা মাত্র। কিন্তু আমার সাথে অনেকেই টার্কিস এয়ারলাইন্স এর একই ফ্লাইটের ইকনোমি ক্লাসের টিকেট ৬০,০০০-৬৫,০০০ টাকা দিয়ে কেটেছিলেন। উল্লেখ্য, তারা ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে টিকেট নিয়েছিলেন।

তবে, ৬০০০০ টাকার টিকেট ৪০০০০ টাকা দিয়ে কাটবেন, আপনি একটুও প্যারা খাবেন না তা কিন্তু হবে না। হ্যা, প্যারা হচ্ছে এদের পেমেন্ট মেথড। আপনি তাদের কাছ থেকে টিকেট নিতে চাইলে অবশ্যই আপনার মাস্টার/ক্রেডিট কার্ড লাগবে। এখন আপনার অথবা আপনার পরিচিত কারও যদি মাস্টার/ক্রেডিট কার্ড থাকে তাহলে আপনার মূল্যবান কিছু টাকা বেচে যেতে পারে। আর না থাকলে, একটু খোঁজে দেখুন; পেয়ে যাবেন (আমিও পেয়েছিলাম)।

বিঃদ্রঃ

১) Student Universe থেকে টিকেট নেয়ার পর তারা আপনাকে তাদের প্লাটফর্মে টিকেটের একটি কোড দিবে এবং আপনি যে এয়ারলাইন্স এর টিকেট নিয়েছেন সেই এয়ারলাইন্সের টিকেটের একটি কোড দিবে। আপনার কর্তব্য হচ্ছে সেই কোড গুলো দিয়ে তাদের এবং এয়ারলাইন্স এর ওয়েবসাইট থেকে ভেরিফাই করে নেয়া।

২) Student Universe থেকে টিকেট নিলে তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া লাগেজ এলাউয়েন্স দেখার পর ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপনি যে এয়ারলাইন্স এর টিকেট নিবেন, সেই এয়ারলাইন্স এর যে লাগেজ রেগুলেশন আছে সেই এলাউন্সই আপনি পাবেন।  Student Universe তাদের ওয়েবসাইটে ইচ্ছা করেই লাগেজ এলাউয়েন্স কম দিয়ে রাখে।

৩) এর পরেও যদি কিছু আপনার কাছে ঘোলাটে মনে হয়, তাহলে তাদের ২৪/৭ লাইভ চ্যাট সিস্টেম আছে। সেখানে কাস্টমার সার্ভিস প্রভাইডার কে যা খুশি জিজ্ঞেস করুন, আশা করি আপনাকে নিরাশ করবে না!

Airport customs

mm

By Raju Ahmed

Raju Ahmed, is a student of Information and Communication Systems (ICS) in Technischen Universität Hamburg (TUHH).

Leave a Reply