এখন বৃষ্টি হচ্ছে, জার্মানির আবহাওয়ার কোনো মা বাপ নাই। ১ ঘন্টায় তুষারপাত, রোদ বা বৃষ্টি হওয়াটা অস্বাভাবিক না। বৃষ্টিটা হলো আমার দেখা সেরা জিনিস কিন্তু সেটা এখানে না। টিএসসিতে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে চা খাওয়া কিংবা মাঠে ফুটবল খেলা অথবা কার্জনের বারান্দায় টুয়েন্টি নাইন খেলার সাথে এইটা মিলানো যায়না। যাহোক আসল উদ্দেশ্য হলো বিদেশে উচ্চশিক্ষায় বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের ছাত্রছাত্রীদের সম্ভবনা নিয়ে লিখা। অনেকের ধারনা বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের তেমন কোনো সম্ভবনা নাই আসলে জিনিসটা ভুল।সমস্যা অনেক। তারমধ্যে কয়েকটা হলো-

১।ব্যাচেলর আর এমএস এ সম্পূর্ন ভিন্ন কোর্সে আসা,

২। আসার পর লালনীল দুনিয়ায় হারিয়ে যাওয়া,

৩।টাকার নেশা- ছাত্র থেকে কামলা বনে যাওয়া,

৪।যোগ্যতা- ‘দেশে মায়ে রান্ধে পোলায় খায় মার্কা’ ইউনি থেকে উচ্চ সিজিপিএ নিয়া বিজ্ঞানী হইতে গেলে যা হয় আরকি।কারন উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের পড়াশোনার মধ্যে ইউরোপের পড়াশোনা বেশ কঠিন কারণ তাত্ত্বিক পড়াশোনা বেশি যেই কারনে খালি এসাইনমেণ্ট কিংবা প্রটোকল জমা দিয়ে পার পাওয়া কঠিন। এখানের এক্সাম মানে এক্সাম কারণ বান্ধবীর লেকচার বা সিনিয়রের চোথা পড়ে পাস করার সিস্টেম নাই সো নো নীলক্ষেত। জীবনে রিসার্চ পেপার ঘাটি নাই এখন কোনো বই নাই খালি রিসার্চ জার্নাল পড়ে এক্সাম হলে যাওয়া লাগে।

এতো আজাইরা কথা বললাম কারণ অনেকের মধ্যে অনেক উচ্চাশা কাজ করে কিন্তু পরে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মধ্যে অনেক পার্থক্য মানতে না পেরে ডিপ্রেশনে ভোগে। সফলতার কথা বলতে পারবনা কিন্তু টিকে থাকার সিস্টেম বলতে গেলে, প্রথম হলো টার্গেট ঠিক রাখা মানে পড়াশোনা করা , দ্বিতীয় হলো দেশী সিস্টেম সব বাতিল কারণ আমাদের দেশের যেই ইউনি র‍্যাঙ্কিংএ ১ নাম্বার সেইটাও ওয়াল্ড র‍্যাংকিং এ ২০০০+ তার মানে পড়াশোনার সিস্টেম ভিন্ন। তিন নাম্বারে বলবো, সুযোগের সন্ধানে থাকা মানে যত র‍্যাংকড ইউনি তত বেশি গবেষনার সু্যোগ, ইন্টারনশীপ, স্টুডেণ্ট এসিস্টেন্টশীপ কিংবা মাস্টার থিসিসের সুযোগ। তাই চোখ কান আর হাত রেডী রাখা।এগুলা পরবর্তীতে আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে দিবে।

হিভি,ইন্টারশীপ বা মাস্টার থিসিসগুলা আমার মতে তিনরকম। এক,ইউনি চেয়ারের আন্ডারে, দুই, রিসার্চ সেন্টার যেমনঃ ম্যাক্সপ্লাঙ্ক হেল্মহোল্টজ ইত্যাদি আর বিজনেস কোম্পানীর আণ্ডারে। সেইগুলার জন্য সবসময় নোটিস বোর্ড কিংবা ইউনি রিক্রুটিং ওয়েবসাইট আর মেইল চেক করে, কভার লেটার আর সিভি দিয়ে এপ্লাই করা।

সারাদিন ক্লাস ল্যাব করে আসার পর নিজের খাবার বানানো কারন নবাবী রুচির কারণে মেনসার খাবার গলা দিয়ে যায়না।কিংবা মাঝেমাঝে তুষারের মধ্যে ক্লাসে যাওয়ার সময় মনে হয় হুদাই আসলাম। তবে যেইখানে যাওয়ার প্লান করেননা কেনো, নিজেকে আগে প্রশ্ন করেন- আসলেই আপনার যোগ্যতা আছে কিনা?মাঝেমাঝে অবাক লাগে পোলাপান জিজ্ঞেস করে ভাই ব্যাচেলরে স্কলারশীপ আছে নাকি? আরে ভাই তু্মি দেশেই ভর্তি হইতে পারতেসো না আর টুম তোমারে স্কলারশীপ দিবো! কিংবা এখনো কষ্ট করার ইচ্ছা আছে নাকি! যদি থাকে শুধু ইঞ্জেনিয়ারিং না লাইফ সায়েন্সের ছাত্রছাত্রীদের ভালো সুযোগ আছে। অভিজ্ঞতা থাকলে ডাড কিংবা ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশীপের সুযোগ আছে। যাহোক আমার সাথে কারো মতের মিল থাকতে পারে কিংবা নাও থাকতে পারে এগুলা জাস্ট ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা।

 

তবে একটা জিনিস সবার মধ্যে মিল আছে সবাই পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদের অনেক মিস করে।আর দেশের খাবার মিস করে। কয়েকদিন ধরেই নান্নার মোরগ পোলাও, ষ্টারের লেগ রোস্ট, নাজিরা বাজারে বিসমিল্লা কাবাব আর গরম গোলাপজাম খাইতে মন চাইতেছে! ধুর ক্ষুধা লাগছে।

রুমে খিচুড়ি আর গরুর মাংস আছে! আজকে খেলা হবে! 🙂

বিদ্রঃ শিরোনাম জেমস বন্ডের একটা মুভির অনুপ্রেরনায় দেওয়া।
আর ভাই পার্সোনাল মেসেজ দিয়ে রিপ্লাই পাওয়ার সম্ভবনা শুন্যের কোঠায়।

জার্মানিতে ভিটামিন ডি! কঠিন সমস্যা এবং সহজ সমাধান!

mm

By Shovon Rahanur

MS. Student in Nutrition and Biomedicine in Technische Universität München(TUM). Research Assistant in Helmholtz Zentrum München. From Dhaka University

One thought on “ফ্রম টিএসসি টু মিউনিখ উইথ হোপঃ আজাইরা কথাসমগ্র”

Leave a Reply